সাতক্ষীরায় যুব পানি কমিটির সক্ষমতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরায় যুব পানি কমিটির উদ্যোগে সক্ষমতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নদী ও পলি ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এ কর্মশালায় তরুণদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা শহরের ম্যানগ্রোভ সভা ঘরে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজন করে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ ও যুব পানি কমিটি, আর সহযোগিতা করে জার্মান উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান দুর্ভাগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে নদী বিশেষজ্ঞ হাসেম আলী ফকির বলেন, “বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত নদী ভরাট, পলি জমা, জলাবদ্ধতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাবে ভুগছে। এসব সমস্যা মোকাবিলায় তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। যুব পানি কমিটি যদি সক্রিয়ভাবে কাজ করে তবে স্থানীয় পর্যায়ে টেকসই নদী ব্যবস্থাপনা সম্ভব।”
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, “নদী রক্ষায় আগে মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও স্থানীয় জনগণের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নদী ভরাট ও জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণরাই এ পরিবর্তনের মূল হাতিয়ার।”
দপ্তর সম্পাদক মহুয়া মঞ্জুয়ারা উল্লেখ করেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যসেবার সংকট নারীদের জীবনে বাড়তি চাপ তৈরি করছে। তাই নারী-পুরুষ সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে নদী ও পলি ব্যবস্থাপনায় পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এ সময় উত্তরণের প্রজেক্ট অফিসার দিলীপ কুমার সানা বলেন, “উত্তরণ দীর্ঘদিন ধরে নদী ও জলাবদ্ধতা সমস্যা নিয়ে কাজ করছে। তরুণরা যদি প্রশিক্ষণ নিয়ে মাঠপর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে তবে গ্রামের সাধারণ মানুষকেও সম্পৃক্ত করা সহজ হবে।”
যুব পানি কমিটির সদস্য অর্পন বসু জানান, “আমরা স্থানীয় তরুণদের সম্পৃক্ত করতে কাজ করছি। আজকের প্রশিক্ষণ থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান তারা গ্রামে ছড়িয়ে দেবে এবং বাস্তব সমস্যার সমাধানে ভূমিকা রাখবে।”
কর্মশালায় প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে সদস্যরা নদী রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানো ও জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়ে মতামত ও সুপারিশ প্রদান করেন। স্থানীয়ভাবে এ ধরনের উদ্যোগকে ভবিষ্যতের টেকসই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।