পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তানে চালানো সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে দেশটির সেনাবাহিনী ১২ জন ‘ভারতীয় মদতপুষ্ট’ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। একইসঙ্গে এই সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দুই সদস্য।
সোমবার (১৯ মে) রাতে দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের খবরে এই তথ্য জানানো হয়।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, শনিবার ও রোববার গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হয়। এতে টেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ)-এর সদস্যদের লক্ষ্য করে একাধিক অভিযান চালানো হয়।
প্রথম অভিযানটি হয় খাইবার পাখতুনখাওয়ার লাক্কি মারওয়াত জেলায়, যেখানে পাঁচজন সন্ত্রাসী নিহত হয়। এরপর বান্নু জেলায় অভিযানে আরও দুইজনকে হত্যা করে সেনাবাহিনী। মীর আলী অঞ্চলে তৃতীয় সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর গাড়িবহরে হামলার পর পাল্টা জবাবে আরও দুই সন্ত্রাসী নিহত হয়। এ সময় শহীদ হন সেনাবাহিনীর সদস্য সিপাহি ফারহাদ আলী তুরি (২৯) ও ল্যান্স নায়েক সাবির আফ্রিদি (৩২)।
অন্যদিকে বেলুচিস্তানের গিশকুর এলাকায় এক অভিযানে ইউনুস নামে এক ‘ভারতীয় মদতপুষ্ট’ সন্ত্রাসী নিহত হয় এবং দুজন আহত হয়। পরবর্তী অভিযানে কেচ জেলার তুরবাতে রিং লিডার সাবর উল্লাহ ও আমজাদ ওরফে বিচ্চু নিহত হয়।
আইএসপিআর জানিয়েছে, অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। নিহতরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা ও সাধারণ নাগরিকদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওইসব এলাকায় আরও সন্ত্রাসী গা-ঢাকা দিয়ে আছে—এজন্য এখনো চলছে স্যানিটাইজেশন অপারেশন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে অস্থিরতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার পেছনে ভারতের ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ ভূমিকা রয়েছে। তবে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী ও জনগণ একসঙ্গে এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে বলে জানানো হয়।
এই অভিযানে পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ, সীমান্ত অঞ্চলের জঙ্গি তৎপরতা এবং আন্তর্জাতিক প্রভাব (বিশেষ করে ভারতের সংশ্লিষ্টতা) নতুন করে আলোচনায় এসেছে।