ক্যাম্পাসে ফেরার পথে ভয়াবহ বাস-ট্রাক সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক মেধাবী শিক্ষার্থী। নিহত শিক্ষার্থীর নাম রাশেদুল ইসলাম, যিনি আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ দুর্ঘটনায় আরও আহত হয়েছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুর রাজ্জাক (আল ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগ, ২০১৭-১৮) এবং আবু নাইম (ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ)।
সোমবার (১৬ জুন) ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ক্যাম্পাস সংলগ্ন বৃত্তিপাড়ায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস বটতৈল থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে পড়ে। দুর্ঘটনার তীব্রতায় বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং যাত্রী রাশেদুল ইসলাম গুরুতরভাবে আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রাশেদুলের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার উদ্দেশ্যে তিনি গতকাল সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে কুষ্টিয়ার পোড়াদহ স্টেশনে নামেন এবং পরে বটতৈল মোড় হয়ে বাসে উঠেন। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সেই যাত্রাই তার জীবনের শেষ যাত্রা হয়ে দাঁড়ায়।
আহত শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তিনি এখন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আপাতত তিনি আশঙ্কামুক্ত হলেও তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। অপর আহত শিক্ষার্থী আবু নাইমের অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো বলে জানা গেছে।
কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হোসেন ইমাম বলেন, “খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা। একজন শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছেন, অন্য একজন গুরুতর আহত। যদিও আপাতত আশঙ্কামুক্ত বলা হচ্ছে, কিন্তু পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহপাঠী, শিক্ষক এবং বন্ধুদের মধ্যে শোক ও হতাশার ছাপ স্পষ্ট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাশেদুলের মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছেন অনেকে।
এই দুর্ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে বাসচালকদের দায়িত্বহীনতা ও সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে।