ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যকার লন্ডন বৈঠক রাজনীতিতে কিছু অগ্রগতি এনে দিলেও এতে নতুন অস্বস্তিরও জন্ম দিয়েছে।
বিশেষ করে বৈঠকের পর তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত একান্ত আলোচনা রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন তৈরি করেছে। এ অবস্থায় বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ও সিদ্ধান্ত জাতির সামনে স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (১৫ জুন) রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতি বহুদলীয়। বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বহু দল জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অংশ নিয়েছে। এখন জাতীয় রাজনীতিতে কোনো দলকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। কিন্তু লন্ডন বৈঠকের পর একক সিদ্ধান্ত ও একান্ত বৈঠক বহু রাজনৈতিক দলের মধ্যে একধরনের উপেক্ষার অনুভূতি তৈরি করেছে।”
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ঈদের আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে যে সময়সূচি ঘোষণা করেছিলেন, তার পরে লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে সময়সূচি পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত আসায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি রক্ষায় এসব প্রশ্নের জবাব ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি।
নির্বাচনের পূর্বে প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার ও বিগত সময়ের ‘পতিত ফ্যাসিবাদ’ এর বিচার নিশ্চিত করার দাবিও আবারও তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, “নির্বাচনের ডামাডোলে যেন বিচার ও সংস্কার আড়ালে না পড়ে, সেদিকে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দেওয়া উচিত।”
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “নির্বাচন নিয়ে আপনাদের অনেক প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এখন আপনাদের উচিত দেশকে ভবিষ্যতের স্বৈরাচারী শাসনের হাত থেকে রক্ষা করতে সাংবিধানিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের সীমা, নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো (এনসিসি), সংসদীয় কমিটির নেতৃত্ব বিরোধীদল থেকে দেওয়াসহ যেসব প্রস্তাব রাখা হয়েছে, সেগুলোর প্রতি বিএনপির সমর্থন আশা করছি।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন—দলের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও যুগ্ম-মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান।