গোপালগঞ্জের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ভোররাতে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা এবং একটি বাসের হেল্পার নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা সহ আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন। দুর্ঘটনাটি রবিবার (১৫ জুন) সদর উপজেলার মেরী গোপীনাথপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ঘটে।
ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক মোঃ মাকসুদুর রহমান মোরাদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ করেই ঢাকাগামী আরমান পরিবহনের একটি বাস এসে ট্রাকটির পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে এসপি গ্রীন লাইনের আরেকটি বাসও এসে প্রথম বাসটিকে আঘাত করে। সংঘর্ষের ফলে আরমান পরিবহনের হেল্পার ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। তবে তখনই চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী নিউ বলেশ্বর পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকসহ উভয় বাসকে আঘাত করে। এতে চতুর্মুখী সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
এই সময় উদ্ধার কাজে নিয়োজিত হাইওয়ে পুলিশের এটিএসআই (ATSI) রফিকুল ইসলামসহ আরও তিন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। গুরুতর আহত রফিকুল ইসলামকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে একজন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা রয়েছেন, যাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর, যাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই বলেন, মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরে ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢিলেঢালা, যা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
উল্লেখ্য, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দেশের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট। প্রতিদিন এই রুটে শতাধিক যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কার চলাচল করে। অতীতে এই মহাসড়কে একাধিক প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ঘটনার পরে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মহাসড়কে আরও বেশি ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন, নিয়মিত গতিনিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারি বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলোতে স্পিড ব্রেকার ও সিসিটিভি স্থাপন করার দাবি জানান তারা।