গোপালগঞ্জে স্বামীর নির্যাতনের শিকার এক নারী বিজিবি সদস্য

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় স্বামীর লাগাতার নির্যাতনের শিকার হয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছেন আফসানা ফেরদৌসী নামে এক নারী বিজিবি সদস্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে দক্ষিণ বাশুড়িয়া গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করে টুঙ্গিপাড়া থানা পুলিশ। পরবর্তীতে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী আফসানা ফেরদৌসী অভিযোগ করেন, তার স্বামী রেজাউল হোসেন প্রায়ই পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার রাত ১০টার দিকে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়, গরু জবাইয়ের ছুরি হাতে নিয়ে ভয় দেখানো হয় এবং পরে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখা হয়।
আফসানা ফেরদৌসী বিজিবির মেডিকেল কোরে নার্স হিসেবে খাগড়াছড়িতে কর্মরত। তার ১৪ বছর আগে রেজাউলের সঙ্গে বিয়ে হয় এবং তাদের একটি ১১ বছর বয়সী ছেলে রয়েছে। ঈদের ছুটিতে ছেলেকে নিয়ে খুলনায় আসেন তিনি। সেখান থেকে পরিবারসহ শ্বশুরবাড়ি টুঙ্গিপাড়ায় গেলে এই ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগীর ছোট মামা বিষয়টি জানতে পেরে ভয়ে ৯৯৯-এ ফোন করেন। পুলিশের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে আফসানাকে উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং নিরাপত্তার স্বার্থে মামা জাহাঙ্গীর আলমের জিম্মায় দেওয়া হয়।
টুঙ্গিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খোরশেদ আলম জানান, ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত রেজাউল হোসেনকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আফসানার অভিযোগ অনুযায়ী, তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে তাকে নির্যাতন করে আসছিলেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “শুধু মারধর নয়, ছুরি হাতে তেড়ে আসা, তালাবদ্ধ করে রাখা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের গালিগালাজ করে হুমকি দেওয়া—এসবের মধ্যে দিয়ে আমাকে প্রায়ই যেতে হয়। এখন আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
এই ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হলো—পারিবারিক সহিংসতা সমাজের সব শ্রেণির নারীদেরই প্রভাবিত করছে। একজন শিক্ষিত ও সরকারি চাকরিজীবী নারীও এ থেকে রেহাই পাননি। পুলিশের সময়োপযোগী পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।