বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে যুক্তরাজ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক তদন্ত।
ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (NCA) তার মালিকানাধীন কয়েকশ’ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ করেছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
আল-জাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিটের (আই-ইউনিট) বরাতে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে এনসিএ “ফ্রিজিং অর্ডার” জারি করেছে, যার ফলে সাইফুজ্জামান এখন তার জব্দকৃত সম্পত্তিগুলো বিক্রি কিংবা হস্তান্তর করতে পারবেন না।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের নামে অন্তত ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তি রয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১৬ কোটি পাউন্ডের বেশি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনাটি বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে। উল্লেখযোগ্য যে, সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে বহির্বিশ্বে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে আল-জাজিরা ‘দ্য মিনিস্টার্স মিলিয়নস’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে সাইফুজ্জামানের বিশ্বজুড়ে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সম্পদের হিসাব তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যেই রয়েছে তার অন্তত ৩৬০টি বাড়ি।
বাংলাদেশের আইনি অনুরোধের ভিত্তিতে এধরনের আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। এখন দেখার বিষয়, এই অনুসন্ধান কতদূর এগোয় এবং বাংলাদেশের আদালতে এর কী ধরনের প্রভাব পড়ে।