যে ছোট সূরার বরকতে জানাজায় অংশ নেন ৭০ হাজার ফেরেশতা!

এক সাহাবীর জানাজায় ৭০ হাজার ফেরেশতা অংশ নিয়েছিলেন। কী আমল করেছিলেন তিনি? কী ফজিলত রয়েছে সূরা ইখলাসে? জেনে নিন বিশদভাবে।
পবিত্র কুরআনের প্রতিটি সূরা-আয়াতেই রয়েছে অফুরন্ত ফজিলত ও রহমত। তবে কিছু সূরা রয়েছে, যেগুলোর আমলে আল্লাহর বিশেষ নৈকট্য ও পুরস্কার লাভ করা যায়। এমনই একটি সূরা হলো সূরা ইখলাস—একটি ছোট অথচ গভীর তাৎপর্যপূর্ণ সূরা, যার ফজিলতে একজন সাহাবীর জানাজায় অংশ নিয়েছিলেন ৭০ হাজার ফেরেশতা।
ইসলামের প্রাথমিক যুগের ঘটনা। সাহাবী হযরত মুয়াবিয়া ইবনে মুয়াবিয়া আল মুজানী (রাঃ) ইন্তেকাল করেন। তার জানাজায় উপস্থিত হন অসংখ্য ফেরেশতা, যার নেতৃত্বে ছিলেন জিব্রাইল (আঃ)। এমন মহৎ জানাজা দেখে আশ্চর্য হন নবী করিম (সাঃ)। তিনি জিজ্ঞেস করেন, “হে জিব্রাইল, মুয়াবিয়া কী আমল করেছিলেন, যার ফলে এত উচ্চ মর্যাদা পেলেন?”
জিব্রাইল (আঃ) উত্তরে বলেন, “সে দাঁড়িয়ে, বসে, হাঁটতে গিয়ে, বাহনে চলতে—সবসময় সূরা ইখলাস তেলাওয়াত করত। এই সূরার প্রতি তার ছিল গভীর ভালোবাসা।”
একটি হাদিসে মুয়াজ ইবনে আনাস জুহানী (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবীজী (সাঃ) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি সূরা ইখলাস ১০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন।”
এই কথা শুনে হযরত ওমর (রাঃ) বলেন, “তাহলে তো আমরা অনেক প্রাসাদের মালিক হব।” উত্তরে নবীজী বলেন, “আল্লাহর দান তো আরও প্রশস্ত, আরও সম্মানজনক।”
আরও একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একবার এক সাহাবী যুদ্ধকালীন সময়ে প্রতিটি নামাজেই সূরা ইখলাস পাঠ করতেন। সাহাবীরা এ বিষয় নবীজীকে জানালে তিনি বলেন, “তোমরা জিজ্ঞেস করো, কেন সে এমন করে?” উত্তরে সেই সাহাবী জানান, “এই সূরায় আল্লাহর গুণাবলী আছে, আমি এই সূরাকে ভালোবাসি।”
নবীজী (সাঃ) তখন বলেন,
“তাকে বলো, আল্লাহও তাকে ভালোবাসেন।”
সূরা ইখলাসের ফজিলত শুধু মুখে বলার বিষয় নয়—এটি এমন একটি সূরা, যা অন্তর দিয়ে ভালোবাসলে, আমলে রূপান্তর করলে আল্লাহর ভালোবাসা ও জান্নাতের প্রাসাদ লাভ নিশ্চিত হয়ে যায়।
প্রতিদিনের জীবনে এই সূরাকে অন্তরে ধারণ করা হোক আমাদের অভ্যাস ও প্রার্থনা