মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৫ জনের, যাদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩১ জন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ভোররাতে, থাইল্যান্ড সীমান্তঘেঁষা ব্যস্ত ইস্ট-ওয়েস্ট হাইওয়েতে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার এর তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মিনিভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পর বাসটি উল্টে যায় এবং মিনিভ্যানটি রাস্তা থেকে ছিটকে খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ১৩ জন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও ২ জনের মৃত্যু হয়।
পেরাক রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় কিছু যাত্রী নিজেরা বেরিয়ে আসতে পারলেও অনেকে বাসের ভেতরে আটকে পড়েন, কেউ কেউ ছিটকে পড়েন রাস্তায়। উদ্ধার কাজের জন্য ব্যবহার করা হয় হাইড্রোলিক কাটার, যাতে আটকে পড়া যাত্রীদের বের করে আনা যায়। গুরুতর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পুরো ঘটনাটি ছিল যেন এক মর্মান্তিক বিভীষিকা। অন্ধকারে হাইওয়ের পাশে ছড়িয়ে ছিল আহত ও মৃতদেহ, যাত্রীদের আর্তনাদে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। দ্য স্টার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গড়ে প্রতি দুই ঘণ্টায় একজন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন দেশটিতে। অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি ট্রাফিক সচেতনতা এবং যানবাহনের মানোন্নয়নের অভাবকে অনেক বিশেষজ্ঞ এই প্রবণতার জন্য দায়ী করছেন।
এই ঘটনায় মালয়েশিয়ার জনসাধারণের মধ্যে শোক ও ক্ষোভ উভয়ই ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়েছে ইতোমধ্যেই।
দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে এবং এই ধরনের শিক্ষার্থী পরিবহন নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বিধি পর্যালোচনার ঘোষণা দিয়েছে।