রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আজ পরিণত হয়েছে মানুষের ঢল নামার এক মহামঞ্চে। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশাল মহাসমাবেশ। শনিবার সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত ও দূরদূরান্তের জেলা-উপজেলা থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হন।
সমাবেশের মূল সভাপতিত্ব করছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী। এছাড়া সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং দেশের খ্যাতনামা উলামায়ে কেরাম সমাবেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করছেন। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ মহাসমাবেশ দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে বলে আয়োজক সূত্রে জানা গেছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশের রাস্তাগুলো ছিল দিনভর ব্যস্ত। শাহবাগ, মতিঝিল, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, নীলক্ষেত, কলাবাগান, যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর প্রায় সব অঞ্চল থেকে মিছিল আসতে দেখা গেছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাস-ট্রাকে করে নেতা-কর্মীরা ঢাকায় এসে হাজির হয়েছেন।
হেফাজতের পক্ষ থেকে সমাবেশে দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছিল। তাদের দাবি, এই চার দফা শুধু একটি সংগঠনের নয়, বরং দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের চেতনার প্রতিফলন।
হেফাজতের চার দফা দাবি:
১. নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ও এর প্রতিবেদন বাতিল।
২. সংবিধানে ‘বহুত্ববাদ’ শব্দ বাদ দিয়ে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল।
৩. হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং শাপলা চত্বরসহ সব ‘গণহত্যার’ বিচার।
৪. ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিমদের উপর ‘গণহত্যা ও নিপীড়ন’ বন্ধে সরকারের কার্যকর ভূমিকা।
এই মহাসমাবেশ নিয়ে রাজধানীতে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল ও আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকে মনে করছেন, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বলয়ের বাইরে গিয়ে একটি বৃহত্তর সামাজিক দাবিকে সামনে আনার কৌশল হিসেবে হেফাজত নতুনভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। হেফাজতের এই মহাসমাবেশকে সেই ক্ষোভের একটি শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।