ভয়াবহ দাবানলের কবলে ইসরায়েল, বিদেশি সহায়তার আবেদন

ইসরায়েলের দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে, যা দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক অগ্নিকাণ্ড বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজধানী থেকে তেল আবিব যাওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘১ নম্বর মহাসড়ক’। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল বাহিনী। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে তেল আবিব।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বুধবার জেরুজালেমের উপকণ্ঠে অবস্থিত এশতাওল বন থেকে দাবানলের সূত্রপাত ঘটে। এটি গত এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো বড় অগ্নিকাণ্ড। গ্রীষ্মকালীন খরা ও উচ্চ তাপমাত্রার ফলে আগুন দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মহাসড়কের দুই পাশে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে, আর পাহাড়ের চূড়ায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী ঘুরছে।
জেরুজালেমের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগের বিভাগীয় কমান্ডার সুমিলিক ফ্রিডম্যান বলেন, “আমরা একটি বিশাল দাবানলের মুখোমুখি হয়েছি। সম্ভবত এটি ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এই আগুন নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ সময় লাগবে।”
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য আবেদন জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া তিনটি অগ্নিনির্বাপক বিমান পাঠাতে সম্মত হয়েছে। এছাড়াও গ্রিস, সাইপ্রাস ও বুলগেরিয়ার কাছেও সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ১২০টি অগ্নিনির্বাপক ও উদ্ধারকারী ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সেনাবাহিনীর বিশেষ অনুসন্ধান ও উদ্ধার ইউনিটকেও তলব করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তিনটি সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগুনে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে টাইমস অব ইসরায়েলের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। তারা চায়, অগ্নিনির্বাপক দল পাঠিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নিতে। যদিও ইসরায়েল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। এর আগেও বড় ধরনের দাবানলে ফিলিস্তিনি অগ্নিনির্বাপকরা সহায়তা করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চরম আবহাওয়া ও বন রক্ষায় দীর্ঘদিনের অবহেলা এই ধরনের বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ।