আগামীকাল ‘মহান মে দিবস’ ও ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশকে নতুন করে গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে চাই ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং আস্থার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এক সুদৃঢ় সমাজ। শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক হতে হবে সহযোগিতামূলক এবং বিশ্বাসনির্ভর।”
ড. ইউনূস বলেন, “বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের প্রতীক হয়ে ওঠা ১ মে তারিখটি শুধু একটি দিবস নয়, এটি শ্রমিক আন্দোলনের রক্তাক্ত ইতিহাস ও সংগ্রামের গৌরবময় স্মারক।” তিনি ১৮৮৬ সালের শিকাগো শহরের ‘হে মার্কেট’ আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, “এই আত্মত্যাগেই আজকের শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা দেশের মেহনতি মানুষের ত্যাগ ও পরিশ্রমের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।”
এবার মে দিবসের প্রতিপাদ্য— ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়বো এদেশ নতুন করে’—কে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, “শ্রমিক ও মালিক পরস্পরের পরিপূরক। তাদের যৌথ প্রচেষ্টা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন ও আত্মনির্ভর বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়। পোশাকশিল্প, কৃষি, নির্মাণ, প্রযুক্তি— প্রতিটি খাতের অগ্রগতির পেছনে রয়েছে শ্রমিকের মেধা ও শ্রম এবং মালিকের দূরদর্শী পরিকল্পনা।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা যদি শ্রমিক-মালিক ঐক্য ও সহযোগিতা বজায় রাখতে পারি, তবে আগামীর বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন ও মানবিক। জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমরা গড়ে তুলতে পারি একটি নতুন সমাজব্যবস্থা।”
এ বছরের মে দিবসের পাশাপাশি পালিত হচ্ছে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫’, যা শ্রমিক কল্যাণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ড. ইউনূস বলেন, “শ্রমিকের নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও স্বাস্থ্য রক্ষা করা শুধু সামাজিক দায় নয়, এটি শিল্পখাতের অগ্রগতির পূর্বশর্ত। কর্মস্থলে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত হলে উৎপাদনশীলতা বাড়বে, শ্রমিকের জীবনমান উন্নত হবে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতেই তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
তিনি এ দুই দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন এবং শ্রমিক-মালিক অংশীদারিত্বে একটি উন্নত, শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।