সারা দেশের ন্যায় ময়মনসিংহেও যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস ২০২৫। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং এডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হয় দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালি।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিল: “The Future of Peacekeeping”—যা ভবিষ্যতের শান্তিরক্ষা উদ্যোগের গুরুত্বকে সামনে এনে উদযাপনকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার জনাব মোঃ মোখতার আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন হায়দার, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, কমান্ডার, সদর দপ্তর ৭৭ পদাতিক ব্রিগেড, মোমেনশাহী সেনানিবাস।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি জনাব মোহাম্মদ আতাউল কিবরিয়া। তিনি তার বক্তব্যে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার পাশাপাশি উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর সন্তান ও বীরাঙ্গনাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ ও অবদানের কথা স্মরণ করেন।
ডিআইজি বলেন, “১৯৮৮ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন, তারা আমাদের জাতীয় গর্ব। তাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগ বাংলাদেশকে বিশ্ব শান্তির এক উজ্জ্বল প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।”
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন হায়দার এবং বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার আহমেদ। বক্তারা শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের সাফল্য ও অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সকাল ৮টায় ডিআইজি কার্যালয় প্রাঙ্গণে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে এবং শান্তির প্রতীক কবুতর অবমুক্ত করে। এরপর বের হয় একটি বর্ণাঢ্য র্যালি, যা জিরো পয়েন্ট, ব্যাট বল চত্বর হয়ে টাউন হল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
আলোচনা সভার শুরুতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শহীদ শান্তিরক্ষীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এতে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ছাড়াও সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, র্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআই, জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
এ আয়োজনের মাধ্যমে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ৩৭ বছরের গৌরবময় অবদানকে স্মরণ করা হয় এবং ভবিষ্যতেও বিশ্বশান্তি রক্ষায় দেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।