কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জ।। সারা দেশের মতো গোপালগঞ্জেও আজ থেকে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী ভূমি মেলা ও ভূমি সেবা সপ্তাহ–২০২৫। জেলার পাঁচটি উপজেলা—গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুরে ২৫ থেকে ২৭ মে পর্যন্ত চলবে এ আয়োজন, যা সাধারণ মানুষের কাছে আধুনিক ও ডিজিটাল ভূমিসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।
ভূমি মেলার উদ্বোধন উপলক্ষে রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। এতে নেতৃত্ব দেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্মসচিব) মুহম্মদ কামরুজ্জামান। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ হয়।
এরপর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ স্বচ্ছতায় “ভূমি মেলা” প্রতিপাদ্যে জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম তারেক সুলতান এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সহকারী কমিশনার (আরডিসি, এলএও) প্রবীর বিশ্বাস। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, “ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নাগরিকদের জন্য অটোমেশনভিত্তিক একাধিক সেবা চালু করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ই-নামজারি, অনলাইন খাজনা পরিশোধ, ই-পর্চা আবেদন, স্মার্ট ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপসহ আরও অনেক কিছু।”
তিনি আরও জানান, গোপালগঞ্জে আয়োজিত ভূমি মেলায় সরাসরি জনসেবা প্রদান করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে—অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন, জমির খতিয়ানের সার্টিফায়েড কপি ও মৌজা ম্যাপ বিতরণ, জরিপ কার্যক্রম সংক্রান্ত গণশুনানি, আপত্তি বা আপিল দাখিল ও নিষ্পত্তি, এলএ শাখার ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং সরাসরি জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়ার সুযোগ।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ গোলাম কবির, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসান, জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ রাফিকুজ্জামান, জামায়াতের নায়েবে আমীর আব্দুল ওহাব মোল্লা, সরকারি কৌশুলী অ্যাডভোকেট এম এ আলম সেলিম প্রমুখ।
মেলার উদ্বোধনী দিনে জেলা প্রশাসক অতিথিদের নিয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে বেলুন উড়িয়ে ও ফিতা কেটে মেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। সেখানে উপস্থিত সেবা গ্রহীতাদের হাতে তিনি ই-নামজারির কপি, মৌজা ম্যাপ ও এলএ শাখার ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন।
এই আয়োজনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, গণমাধ্যমকর্মীসহ নানা শ্রেণির মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
