ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে টানা পাঁচ রাত ধরে গোলাগুলি

জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর টানা পাঁচ রাত ধরে গোলাগুলিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা যখন চরমে, ঠিক তখনই কুপওয়ারা, বারামুল্লা ও আখনুর সেক্টরে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ২৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে পাকিস্তান সেনারা বিনা প্ররোচনায় ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালায়। মূলত কুপওয়ারা ও বারামুল্লা জেলার বিপরীত এলাকা এবং আখনুর সেক্টরকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। ভারতীয় পক্ষ জানিয়েছে, উসকানির যথাযথ ও কার্যকর জবাব দেওয়া হয়েছে এবং সীমান্ত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর সূত্র মতে, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে পাকিস্তান ধারাবাহিকভাবে ভারতীয় অবস্থানগুলো লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে আসছে। যদিও এখন পর্যন্ত এই গোলাগুলির ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবুও সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় এক নেপালি নাগরিকসহ ২৬ জন প্রাণ হারান। ভারত এই হামলার জন্য আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসকে দায়ী করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে ৬৫ বছর পুরোনো সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, আত্তারি সীমান্ত বন্ধ এবং পাকিস্তানি সামরিক অ্যাটাশেদের বহিষ্কার।
ভারতের এই সিদ্ধান্তের জবাবে পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, তারা নয়াদিল্লির সঙ্গে স্বাক্ষরিত ১৯৭২ সালের ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তি সহ সমস্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত করতে পারে। উল্লেখ্য, এই চুক্তির মাধ্যমেই জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ রেখা নির্ধারিত হয়, যা আজও দুই দেশের উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এমন টানাপোড়েন নতুন কিছু নয়। তবে সাম্প্রতিক ঘটনায় উত্তেজনার মাত্রা ও পরিণতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলও গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। ভবিষ্যতে এই সংঘর্ষ কতটা বিস্তৃত হবে, তা এখন সময়ই বলবে।