অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভয়াবহ হামলা অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার (২৩ মে) সকাল থেকেই নতুন করে শুরু হওয়া বিমান ও স্থল হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৭৬ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজাভিত্তিক চিকিৎসা সূত্র।
এই তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বিশেষত গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে একটি বাড়িতে চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলায় বহু সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী নিরীহ বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা করছে, যেন তা একটি ‘উৎসবের’ রূপ নিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, “গাজার সংঘাত এখন সবচেয়ে নিষ্ঠুর পর্যায়ে পৌঁছেছে।” তিনি আরও জানান, ইসরায়েল অতি সামান্য মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে, ফলে বিশেষ করে উপত্যকার উত্তরাংশে তীব্র খাদ্য ও ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৮২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২২ হাজার ৩৮২ জন আহত হয়েছেন। এই বিপুল সংখ্যক হতাহত ইসরায়েলি আগ্রাসনের ভয়াবহতা আরও স্পষ্ট করে তোলে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি সীমিতভাবে অবরোধ তুলে নিয়ে ৯০টি ত্রাণবাহী ট্রাক জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে গাজায় প্রবেশ করতে দিয়েছে। এই ট্রাকগুলো ইতোমধ্যে ওয়্যারহাউসে সরবরাহ করা হয়েছে। এর আগে ২০ মে পর্যন্ত গাজায় প্রবেশ করেছে আরও ৯৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, তারা গাজার জন্য ১ লাখ ৪০ হাজার টন খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। এসব সামগ্রী বহনকারী ৬ হাজার ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে পারলে, পুরো উপত্যকার মানুষের দুই মাসের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
এই ভয়াবহ মানবিক সংকটে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, গাজায় চলমান হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবতা বিরোধী। এ পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রবিরতি এবং পূর্ণাঙ্গ ত্রাণ প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।