রাজনৈতিক সংস্কার প্রস্তাবনা ও সুপারিশমালা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে গণসংহতি আন্দোলন এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মধ্যে। রোববার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় রাজধানীর সংসদ ভবনের এলডি হলে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি, প্রখ্যাত রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
এই আলোচনায় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের নেতা দেওয়ান আব্দুর রশিদ নীলু ও মনির উদ্দীন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক রায় ও তরিকুল সুজন অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি আমাদের দায় রয়েছে। এই আন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা সামান্য হলেও অগ্রগতি অর্জন করেছি। তবে সেই অগ্রগতিকে ধরে রাখতে না পারলে আন্দোলনের মূল চেতনা ব্যর্থ হয়ে যাবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় গভীর ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এই প্রচেষ্টা কেবল বর্তমান প্রজন্মের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতের নতুন বাংলাদেশের জন্য।”
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, “ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাবে। বৈঠকে অংশীজনদের সম্মত বিষয়গুলোই ‘জুলাই সনদ’ হিসেবে গৃহীত হবে।”
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ইতোমধ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রথম ধাপের আলোচনা সম্পন্ন করেছে।
আজকের বৈঠক শেষে ঐকমত্য কমিশন বিকেলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সঙ্গেও আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। রাজনৈতিক সংস্কারের এই ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।