ফেনীতে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী বইমেলা সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। সোমবার বিকেলে শহরের নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টারে আয়োজিত সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই মেলার পরিসমাপ্তি ঘটে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী পয়েন্ট সোসাইটির সভাপতি ও আনন্দ ভৈরবী পত্রিকার সম্পাদক, কবি মঞ্জুর তাজিম। তিনি বলেন, “বই হলো অমূল্য সম্পদ—এটি পড়লে কেউ দেউলিয়া হয় না। বর্তমান তরুণ প্রজন্ম বই থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তাদের মোবাইল আসক্তি কমিয়ে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে।”

বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ফেনীর ইনচার্জ দেবুজ্যোতি মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলাপন আবৃত্তি কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক নাজমুল হক শামীম এবং ফেনী আর্ট স্কুলের পরিচালক গোপাল দাস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ বইমেলার সংগঠক মো. মনিরুজ্জামান।

বিশেষ অতিথি নাজমুল হক শামীম বলেন, “বই মানুষের মনন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিক্ষার্থীদের বইমুখী করতে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এমন আয়োজন নিয়মিত হওয়া উচিত।”

দেবুজ্যোতি মন্ডল জানান, পাঁচ দিনের এ বইমেলায় প্রায় ছয় শতাধিক বই বিক্রি হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় এক লাখ টাকার কাছাকাছি। সংগঠক মনিরুজ্জামান জানান, ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের এই বইমেলা কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২০২৫ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত তা চলবে। চলতি মে মাস পর্যন্ত ১২৮টি নির্ধারিত বইমেলার মধ্যে ৬০টি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে এবং দেশের ৩০টি জেলায় এ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে আবৃত্তি, গান, চিত্রাঙ্কন ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে অতিথিবৃন্দ পুরস্কার বিতরণ করেন। বিজয়ীদের হাতে মূল্যবান বই তুলে দেওয়া হয়।

আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে তোয়াহ চৌধুরী তোয়া, দ্বিতীয় হন সম্পূর্ণ সাহা ও তৃতীয় মাইসা বিনতে ফেরদৌস। গান বিভাগে প্রথম হয়েছেন দিঘী সেন এবং দ্বিতীয় হয়েছেন রাজশ্রী কর।

বইমেলাটি ফেনীবাসীর মধ্যে পাঠাভ্যাস ও সাহিত্য চর্চার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মন্তব্য করেন আয়োজকরা।