বাংলাদেশে বেকারত্ব পরিস্থিতি নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর সদ্য প্রকাশিত “ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপ ২০২৪”-এর চতুর্থ কোয়ার্টারের সাময়িক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, গত এক বছরে দেশে বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার। তবে আশ্চর্যজনকভাবে এই বৃদ্ধির জন্য নারীদের কোনো অবদান নেই—সম্পূর্ণ সংখ্যাটিই পুরুষ বেকারের।

২০২৩ সালে দেশে বেকার জনগোষ্ঠীর মোট সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৬০ হাজার। ২০২৪ সালের সর্বশেষ চতুর্থ কোয়ার্টারে তা দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ২০ হাজারে। এর মধ্যে পুরুষ বেকার সংখ্যা ১৬ লাখ ৪০ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখে। অন্যদিকে, নারী বেকারের সংখ্যা একই রয়েছে—৮ লাখ ২০ হাজার।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তন শ্রমবাজারে লিঙ্গভিত্তিক অংশগ্রহণ ও সামাজিক গঠনগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা হয়তো চাকরি সন্ধানে সক্রিয় নন বা তারা অনানুষ্ঠানিক খাতে রয়েছেন, যা পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হয় না। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে বেকারত্বের হার বাড়ছে মূলত অর্থনৈতিক মন্দা, নতুন কর্মসংস্থানের সীমাবদ্ধতা এবং কিছু ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাবের কারণে।

বিবিএস-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, যারা বিগত ৭ দিনে ১ ঘণ্টাও কোনো কাজ করেননি, কিন্তু কাজ করার জন্য প্রস্তুত এবং গত ৩০ দিনে কোনো বেতনের বা লাভজনক কাজ খুঁজেছেন—তাদেরকেই বেকার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

শ্রমবাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বেকারত্ব হারের এই বৃদ্ধি নীতিনির্ধারকদের জন্য একটি সতর্ক সংকেত। বিশেষ করে, তরুণদের কর্মসংস্থানে সরকারি-বেসরকারি খাতে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। পাশাপাশি, দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির পুনর্মূল্যায়নও জরুরি।