বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য বড় পরিকল্পনার কথা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। হৃৎপিণ্ড যদি দুর্বল হয়, তাহলে দেশের আর কিছুই ঠিকঠাক চলে না।” তাই বিশ্বখ্যাত বন্দর পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণে বন্দর ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে সরকার।

চট্টগ্রাম সফরের শুরুতে নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। অধ্যাপক ইউনূস জানান, বিদেশি কোম্পানিগুলোর সম্পৃক্ততা এই বন্দরের সক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে বড় ধরনের উন্নয়ন ঘটাতে পারে। তাঁর ভাষায়, “এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ।”

তিনি আরও বলেন, “যদি সরকারের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে দেশে হাজার হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং অর্থনীতিতে দৃশ্যমান ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।” চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য ও নেপালের সংযোগ স্থাপন করার কথাও বলেন তিনি। “যারা এই উদ্যোগে যুক্ত হবে, তারা উপকৃত হবে; যারা হবে না, তারা পিছিয়ে পড়বে,”—বলেন ইউনূস।

বন্দরের উন্নয়ন নিয়ে শৈশবের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি শৈশব থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরকে জানি। এটি অনেক বদলেছে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো পরিবর্তনের গতি খুব ধীর।”

নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের আশেপাশে একাধিক টার্মিনাল নির্মাণ করলে কনটেইনার জট কমবে। আশা করি আগামী ছয় মাসের মধ্যেই এই পরিবর্তন দেখা যাবে।”

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান জানান, বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্য এবং এর ৯৮ শতাংশই এই টার্মিনালের মাধ্যমে হয়। তবে গভীরতার সীমাবদ্ধতায় দৈর্ঘ্যে ২০০ মিটারের বেশি জাহাজ ভিড়তে না পারায় প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ ডলার ক্ষতি হয়, যা বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়নের আর কোনো বিকল্প নেই।”