গোপালগঞ্জে জেলা গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা কমিটির ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত

জেলার গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা কমিটির ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ ‘স্বচ্ছতা’য় এ সভার আয়োজন করে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্মসচিব) মুহম্মদ কামরুজ্জামান।
সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, গ্রাম আদালতের কার্যক্রম আগের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত হচ্ছে। এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে হিসাব সহকারী ও ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জেলার ৬৭টি ইউনিয়নে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রশিক্ষণের ফলে ডকুমেন্টেশন পদ্ধতিও আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।
তবে জেলা প্রশাসক আক্ষেপ করে জানান, “চেয়ারম্যানরা অনেক সময় নিয়মিত এজলাসে বসেন না, যা গ্রহণযোগ্য নয়। নিয়মিত বিচার না হলে জনগণের আস্থা নষ্ট হবে।” তিনি সব চেয়ারম্যানকে নিয়মিত এজলাসে বসে বিচার কার্য পরিচালনার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে, ভিসিএমসি কমিটির সদস্যদের গ্রাম আদালতের কার্যক্রম নিয়মিত পরিদর্শনের ওপর জোর দেন তিনি।
সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও কমিটির সদস্য সচিব (উপসচিব) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, “গ্রাম আদালতের এখতিয়ারভুক্ত অনেক মামলা এখনো স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়। এতে গ্রাম আদালতের ভূমিকা ক্ষুণ্ণ হয়।” তিনি এসব মামলা আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি আরও জানান, গত তিন মাসে জেলার ৬৭টি ইউনিয়নে মোট ২৭০টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে জেলা আদালত থেকে ৩৭টি মামলা গ্রাম আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে। “এটি প্রমাণ করে, গ্রাম আদালতের ওপর জনগণের আস্থা বাড়ছে,” বলেন তিনি।
সভাটি সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম তারেক সুলতান। উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান, সেনা ক্যাম্প কমান্ডার মেজর ইমরানুল হুদা, জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ ফারুক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আ. কাদের সরদার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ওহিদ আলম লস্কার, তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাসসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
সভায় বিগত তিন মাসের কার্যক্রম নিয়ে পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপনা করেন এভিসিবি-৩ প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক মো. আলিউল হাসানাত খান। তিনি কার্যক্রমের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
স্থানীয় বিচার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে এবং জনগণের দোরগোড়ায় ন্যায়বিচার পৌঁছে দিতে এমন সভাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।