ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তার দেশের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো ইচ্ছা নেই। পার্লামেন্টে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ইরান শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার চায়, কিন্তু কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পথে হাঁটবে না।

সোমবার (১৬ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা’র বরাতে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, “আমরা পারমাণবিক অস্ত্র চাই না। আমাদের এ রকম কোনো উদ্দেশ্যই নেই।" তিনি উল্লেখ করেন, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে— মূলত জ্বালানি উৎপাদন ও বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনে।

চলমান ইসরায়েলি হামলা ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিক্রিয়ার প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, “শত্রুরা যদি মনে করে হত্যা, আক্রমণ আর গুপ্তহত্যার মাধ্যমে তারা আমাদের এবং আমাদের জাতিকে মুছে ফেলতে পারবে— তাহলে তারা ভুল করছে। কারণ, একজন বীর শহীদ হলে তার পতাকা তুলে ধরার জন্য শত শত নতুন বীর তৈরি হয়ে দাঁড়ায়। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে, অপরাধ আর বিশ্বাসঘাতকতা প্রতিরোধ করবে।”

পেজেশকিয়ান জোর দিয়ে বলেন, “আমরা আগ্রাসী কোনো রাষ্ট্র নই। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের অধিকার রয়েছে।" তিনি আরও বলেন, “আমরা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখব— জ্বালানি উৎপাদন ও বৈজ্ঞানিক প্রয়োজনে। কারণ, পারমাণবিক শক্তি থেকে উপকার পাওয়া আমাদের অধিকার।”

ইরানের পক্ষ থেকে এই বক্তব্য এমন সময়ে এল, যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে, বিশেষ করে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে। পশ্চিমা বিশ্ব একাধিকবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে। তবে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান এসব অভিযোগকে "ভিত্তিহীন" আখ্যা দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন।

এই বক্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে, ইরান আপাতত প্রতিরক্ষা ও জ্বালানিভিত্তিক প্রয়োজনে পারমাণবিক কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও, সামরিক উদ্দেশ্যে অস্ত্র উৎপাদনের কোনো পরিকল্পনায় নেই।