যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চার দিনের উপসাগরীয় সফরের প্রথম ধাপে আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। এটি তাঁর দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট মেয়াদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফর, যা অর্থনৈতিক বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং কৌশলগত সামরিক চুক্তির দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

রিয়াদে পৌঁছানোর পর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ট্রাম্পের একটি প্রাথমিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সফরের অংশ হিসেবে ট্রাম্প আজ ‘সৌদি-মার্কিন বিনিয়োগ ফোরামে’ অংশ নেবেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও করপোরেট নেতারা অংশ নিচ্ছেন।

বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য উপসাগরীয় অঞ্চল নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে। গত জানুয়ারিতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ঘোষণা দেন, আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করবে রিয়াদ। তবে ট্রাম্পের লক্ষ্য আরও বড়—তিনি চান বিনিয়োগের অঙ্ক এক ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়াক, যা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ১২১ লাখ ৫২০ হাজার কোটি।

এ সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো সামরিক চুক্তি। ট্রাম্প আশা করছেন, সৌদি আরব আরও আধুনিক মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ে আগ্রহী হবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখযোগ্য যে, ট্রাম্প তাঁর প্রথম প্রেসিডেন্ট মেয়াদেও সৌদি আরব থেকেই প্রথম বিদেশ সফর শুরু করেছিলেন। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টদের সাধারণত যুক্তরাজ্য, কানাডা বা মেক্সিকোর মতো মিত্র দেশগুলোতেই প্রথম সফরের রীতি রয়েছে। এটি ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির ব্যতিক্রমী ধারা ও মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক কৌশলগত অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়।

আগামীকাল বুধবার ট্রাম্প কাতার সফরে যাবেন এবং বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন বলে হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে। সফরের প্রতিটি ধাপে অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক ইস্যুতে মার্কিন প্রভাব বৃদ্ধির কৌশলই রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।