নিষেধাজ্ঞা জারি থাকা সত্ত্বেও সচিবালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা। প্রেস ক্লাব থেকে পদযাত্রা শুরুর পরপরই পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ একাধিক সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে। এতে রাজধানীর প্রেস ক্লাব ও সচিবালয় এলাকার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

রোববার (১৫ জুন) দুপুর সোয়া ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম শুরুর দাবিতে প্রেস ক্লাব থেকে সচিবালয়ের ৫ নম্বর গেট অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন। তবে পুলিশের দাবি, সচিবালয় এলাকাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অঞ্চল, যেখানে পূর্ব থেকেই সভা-সমাবেশ, মিছিল বা গণজমায়েত নিষিদ্ধ।

সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড অতিক্রম করে সচিবালয়ের গেটের কাছাকাছি চলে গেলে পুলিশ তাদের থামতে অনুরোধ করে। কিন্তু তারা সেই অনুরোধ উপেক্ষা করলে পুলিশ প্রথমে পাঁচটি ও পরে আরও দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এরপর শুরু হয় লাঠিচার্জ। বাধ্য হয়ে বিক্ষোভকারীরা পিছু হটে প্রেস ক্লাব মোড়ে ফিরে অবস্থান নেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, “সচিবালয় সংলগ্ন এলাকাটি উচ্চ নিরাপত্তার আওতায়। সেখানে কোনো সভা-সমাবেশ করার অনুমতি নেই। আন্দোলনকারীরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এগোতে চাইলে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হই।”

আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক নিবন্ধনধারী জানান, “আমরা বারবার শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানাচ্ছি, কিন্তু সরকার তা গুরুত্ব দিচ্ছে না। এখন আবার ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে, অথচ আমাদের ১৭তম ব্যাচের বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। তাই আমরা সচিবালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিতে চেয়েছিলাম।”

আন্দোলনকারীদের প্রধান তিনটি দাবি হলো—

১. ১৭তম ব্যাচের নিবন্ধিত প্রার্থীদের জন্য আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অন্তত একবার আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে।

২. ১৭তম ব্যাচের বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।

৩. আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএর সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা প্রেস ক্লাব মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পুরো এলাকা থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।