তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টা, সালিশে ৩৫ হাজার টাকায় মীমাংসা

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় মানিকগঞ্জ থেকে আগত এক তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে সালিশের মাধ্যমে ৩৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ‘মীমাংসা’ করেন বলে জানা গেছে।
এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে, উপজেলার চন্ডিপুর বাজারসংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায়। অভিযুক্ত রুবেল মৃধা (৩৫) চরবলেশ্বর গ্রামের ইউনুস মৃধার ছেলে। ভুক্তভোগী ওই তরুণী মানিকগঞ্জ থেকে বরগুনার পাথরঘাটায় প্রেমিকের বাড়িতে যাওয়ার পথে পিরোজপুরে এসে বিপাকে পড়েন।
ভুক্তভোগী তরুণীর ভাষ্যমতে, রাতে বাস থেকে নামার পর রুবেল তাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বাসায় নিয়ে যান। বাসায় কাউকে না পেয়ে তরুণী দরজার পাশে বসে থাকেন। একপর্যায়ে রুবেল অনৈতিক কাজের চেষ্টা করলে তরুণী চিৎকার করেন। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে।
ঘটনার পরদিন ইউপি সদস্য ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক দুলাল ফকির সালিশ বসান। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে রুবেলের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবির পর ৩৫ হাজার টাকায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে টাকার একটি অংশ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে।
দুলাল ফকির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “মেয়েটিকে তার ইচ্ছেমতো পাথরঘাটায় পাঠিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি সমঝোতার ভিত্তিতে শেষ করেছি।”
তবে তরুণীর অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য না দিয়ে তিনি বারবার বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। এমনকি এই প্রতিবেদকের তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ এড়িয়ে যান।
অভিযুক্ত রুবেলের পিতা ইউনুস মৃধাও স্বীকার করেছেন, “সালিশে টাকা দিয়ে মীমাংসা হয়েছে।”
চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন, “এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে শুনেছি সালিশ হয়েছে।”
ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. মারুফ হোসেন বলেন, “ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টার মতো অপরাধে আপসের সুযোগ নেই। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চন্ডিপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল হাই জোমাদ্দার জানান, “বিষয়টি শুনেছি। প্রমাণ মিললে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নেতৃবৃন্দকে জানানো হবে।
-পিরোজপুর প্রতিনিধি,নাছরুল্লাহ আল কাফী।