লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক ও যৌথ সংবাদ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
দলটি বলছে, এমন বৈঠকের পর বিদেশের মাটিতে যৌথ বিবৃতি দেওয়া দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং এটি প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আজ শনিবার সকালে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে এই অভিমত প্রকাশ করা হয়। দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জামায়াত জানায়, ‘প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক ও যৌথভাবে বৈঠক করেছেন। সে প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে বৈঠককে আমরা “খুবই স্বাভাবিক” মনে করি। তবে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলন ও যৌথ বিবৃতি দেওয়া রাজনৈতিকভাবে অশোভন এবং এতে প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইউনূস ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। এর কিছুদিন পরই লন্ডন সফর ও বিএনপির সঙ্গে বৈঠক এবং তৎপরবর্তী বিবৃতিকে জামায়াত রাজনৈতিক ভারসাম্য ও নিরপেক্ষতার পরিপন্থী হিসেবে দেখছে।
জামায়াতের ভাষ্য, ‘যেখানে দেশে বহু রাজনৈতিক দল সক্রিয় রয়েছে, সেখানে কেবল একটি দলের সঙ্গে আলোচনা করে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এমন পদক্ষেপে ভবিষ্যতের নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।’
দলটি আরও বলেছে, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে প্রধান উপদেষ্টার উচিত দেশে ফিরে এসে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা। শুধু একটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর বিবৃতি দেওয়া কোনোভাবেই নৈতিক নয়।
বিজ্ঞপ্তির শেষাংশে জামায়াতে ইসলামী প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, “নির্বাচন ঘিরে উদ্ভূত সংশয় দূর করতে এবং নিরপেক্ষ সরকারের প্রতি জনআস্থা পুনঃস্থাপনে তার অবস্থান পরিষ্কার করাই এখন সময়ের দাবি। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নিরপেক্ষ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনবে।”