আহমেদাবাদে বিমান বিধ্বস্তে অন্তত ১৩৩ জন নিহত

ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ১৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানটি যুক্তরাজ্যের লন্ডনের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সরাসরি একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে আছড়ে পড়ে।
নিউজ-১৮’র খবরে জানানো হয়, বিমানে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাটি ধরা পড়ে আশপাশের ক্যামেরায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দাহ্য বিস্ফোরণ ঘটে এবং পুরো কাঠামো আগুনে জ্বলে ওঠে। আকাশে কালো ধোঁয়ার ঘন কুণ্ডলি ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থলে যেসব ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাস, যেখানে এমবিবিএস শিক্ষার্থীরা অবস্থান করতেন। বিমানটি সরাসরি সেই ছাত্রাবাসে বিধ্বস্ত হওয়ায় বহু শিক্ষার্থীর হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরপরই এলাকায় হাহাকার, আগুন এবং ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আর্তনাদে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আগুন নেভাতে ও উদ্ধার তৎপরতায় ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী যুক্ত হয়েছে।
স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখনো শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর সংখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। তবে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা নিশ্চিতভাবে জানি, এই দুর্ঘটনায় অনেক তরুণ প্রাণ হারিয়েছে। এটি আহমেদাবাদের ইতিহাসে অন্যতম একটি কালো দিন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি সেই সব পরিবারদের প্রতি, যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রাবাসে যারা ছিলেন, তাদের অনেকেই এখনো নিখোঁজ।”
উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে এবং আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা, যা দিয়ে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করা হবে।
এই দুর্ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলেও শোকের ছায়া ফেলেছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা ও পর্তুগালের পররাষ্ট্র দপ্তরগুলো নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজ শুরু করেছে।