চাইলেই যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন।
তিনি বলেন, “উনি বাংলাদেশের নাগরিক, উনি ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন। উনি যেই সময় মনে করবেন, সেই সময় দেশে ফিরবেন।”
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) গাজীপুরের সালনা হাইওয়ে থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
সকাল ১১টার দিকে থানা চত্বরে পৌঁছে উপদেষ্টা প্রথমে উপস্থিত সাংবাদিকদের মাস্ক প্রদান করেন এবং পরে থানার বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “আমি অনুরোধ করবো, আপনারা রিপোর্ট করার সময় কোনো বক্তব্য খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করবেন না। আমরা যা বলি, সেটা পুরোটা দিলে জনগণ সঠিক বার্তা পাবে। প্রতিবেশী দেশ এসব খণ্ডিত বক্তব্যকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করে এবং বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বলার পরে যদি আপনারা খণ্ডিত রিপোর্ট করেন, তাহলে সেটার দায়ভার আপনাদের। তাই কথা সম্পূর্ণরূপে তুলে ধরার অনুরোধ রইলো।” সাংবাদিকরা উত্তরে তাকে আশ্বস্ত করেন যে, তারা খণ্ডিতভাবে আর কোনো বক্তব্য প্রচার করবেন না।
মাস্ক বিতরণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “আমি আজ মাস্ক দিলাম, দেখলাম অনেকেই সেটা পকেটে রেখে দিলেন। মাস্ক পকেটে নয়, নাকে রাখতে হয়। নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন, অন্যদেরও সচেতন করুন।” একইসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের পলিথিন বর্জনের আহ্বান জানান এবং জনমত গঠনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ভারতীয় নাগরিকদের পুশ-ইন বিষয়ে আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমে এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা বলেছি, যদি কোনো বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে থাকে, প্রমাণসহ ফিরিয়ে দিন। কিন্তু ভারত প্রায়ই এই প্রক্রিয়া না মেনে জঙ্গলের ভেতর বা রাস্তা দিয়ে অবৈধভাবে পুশ-ইন করে। এটি মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং অমানবিক।”
তিনি জানান, এ বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় এসব পুশ-ইন হওয়া ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা নিজেরা মাস্ক পরছেন না, অথচ করোনা নিয়ে প্রশ্ন করছেন। এটা দায়িত্বহীনতা। আমি যে মাস্ক দিয়েছি, সেটা ব্যবহার করুন। নিজেরাও বাঁচবেন, অন্যদেরও বাঁচাবেন।”
পরে উপদেষ্টা গাজীপুর সদর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর এলাকায় বিজিবি ৬৩ ব্যাটালিয়নের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে বিজিবির বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যালোচনা করেন এবং একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
এই সময় উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার তাহেরুল হক চৌহান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেকসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পরিদর্শন শেষে তার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় কৃষি বিভাগের একটি প্রকল্প ঘুরে দেখার কথা রয়েছে।