টুঙ্গিপাড়ায় স্থানীয় সংঘর্ষকে রাজনৈতিক সংঘর্ষ বানিয়ে যুবদল নেতাদের সংবাদ সম্মেলন

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ইউনিয়নের কুশলী বাজার এলাকায় মেয়েদের উত্ত্যক্ততা ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে সংঘর্ষটি শুরু হয় এবং এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের মূল সূত্রপাত হয় নিলফা গ্রামের এক কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। মিরাজ মোল্লার ছেলে মোক্তার মোল্লা এবং হেদায়েত মেম্বারের ছেলে জামাল সিকদারের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে শুরু হয়ে পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নেয়। ইট-পাটকেল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে দুই পক্ষ রাস্তায় নেমে আসে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই ঘটনার প্রকৃত পটভূমি সত্ত্বেও কিছু সুবিধাবাদী মহল ঘটনাটিকে রাজনৈতিক মোড় দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা বিএনপির অঙ্গ-সংগঠনের একাংশ ঘটনাটিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষ হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে। সংঘর্ষের তিন দিন পর, গত ৮ জুন গোপালগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তারা। সেখানে একপক্ষের হয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে ঘটনাটিকে ‘রাজনৈতিক হামলা’ বলে প্রচার চালানো হয়।
বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে নির্যাতনের শিকার উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী মাসুদ।
জানা যায়, সংঘর্ষ মীমাংসার লক্ষ্যে উভয় পক্ষের সম্মতিতে তাকেই মধ্যস্থতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে তাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে “দোষী” প্রমাণের চেষ্টা চলে, এমনকি ব্যানারে তার ছবি ব্যবহার করে তাকে সংঘর্ষের সাথে জড়িত দেখানো হয়, যদিও তার সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খোরশেদ আলম স্পষ্টভাবে বলেন, “এটি কোনো দলীয় বা রাজনৈতিক সংঘর্ষ নয়। এটি স্থানীয় দুই পক্ষের কোন্দল মাত্র। গাজী মাসুদের এতে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”
গাজী মাসুদ বলেন, “ওরা নিজেদের ঝামেলা মীমাংসার জন্য আমাকে ডেকেছিল। আমি স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে বিষয়টি সমাধানে এগিয়ে এসেছিলাম। এখন উল্টো আমাকে টার্গেট করে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
ঘটনাটির প্রকৃত রূপ জাতীয় পত্রিকাগুলিতেও স্থান পেয়েছে। আজকের পত্রিকা, কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং চ্যানেল ২৪ সহ কয়েকটি জাতীয় গণমাধ্যমে এই সংঘর্ষের বাস্তব কারণ হিসেবে নারী উত্ত্যক্ততা ও স্থানীয় আধিপত্যের দ্বন্দ্বকেই তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদক – এ.জেড আমিনুজ্জামান রিপন, গোপালগঞ্জ।