ভারতে আবারও চোখ রাঙাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০৬ জন এবং প্রাণ হারিয়েছেন ছয়জন।
নতুন করে মৃত্যু হওয়া ছয়জনের মধ্যে তিনজন কেরালার, দুইজন কর্ণাটকের এবং একজন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। মৃতদের মধ্যে ৪৩ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি ছিলেন, যাঁর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। বাকি পাঁচজনই বয়স্ক নাগরিক, যারা দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন।
বর্তমানে এলএফ.৭, এক্সএফজি এবং জেন.১ নামের ধরনগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। সম্প্রতি এনবি.১.৮.১ নামে একটি নতুন উপধরনও শনাক্ত হয়েছে, যা নিয়ে চিন্তিত দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। ভাইরাসের এই দ্রুত রূপান্তর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাড়তি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
সংক্রমণ বেড়ে চললেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গণহারে বুস্টার ডোজ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন না। তাদের মতে, যারা ইতিমধ্যেই টিকা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে পুনরায় গণটিকাদান এখনই জরুরি নয়। তবে বয়স্ক, গুরুতর অসুস্থ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তিদের বুস্টার ডোজ নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন তারা।
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার স্থানীয় প্রশাসনকে সক্রিয়ভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি জনগণকে মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়া এবং ভিড় এড়িয়ে চলার মতো সাবধানতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শুধু হাঁচি-কাশি বা জ্বর হলেই করোনা ধরে নেওয়া ভুল। করোনা পরীক্ষার মাধ্যমেই নিশ্চিত হতে হবে সংক্রমণ রয়েছে কিনা। কারণ, বর্তমানে প্রচলিত মৌসুমি ফ্লু ও কোভিডের উপসর্গ প্রায় মিলিয়ে যাচ্ছে।
ভারতে আবারও করোনার বিস্তার রোধে প্রয়োজন ব্যক্তি সচেতনতা ও প্রশাসনিক প্রস্তুতির সমন্বয়। নতুন ধরনের উপধরন এবং সংক্রমণ হারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পরিস্থিতিকে পুনরায় জটিল করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।