নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনের ডেমোক্রেটিক প্রাথমিক বাছাইপর্বে মুখোমুখি হচ্ছেন এক অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ও এক তরুণ প্রগতিশীল নেতা। নির্বাচনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছেন সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো ও নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের আইনসভার সদস্য জোহরান মামদানি।

আগামী ২৪ জুন অনুষ্ঠেয় প্রাথমিক ভোটকে ঘিরে নগরের রাজনৈতিক অঙ্গন এখন চরম উত্তেজনায় ভরপুর।

৬৭ বছর বয়সী কুমো যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের পর নিউইয়র্কের গভর্নর হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে ২০২১ সালের যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় পদত্যাগের পর তিনি এবার রাজনীতিতে পুনরায় ফিরে আসার চেষ্টা করছেন। বিপরীতে, ৩৩ বছর বয়সী মামদানি ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্টস অব আমেরিকা (DSA)-র সমর্থিত একজন বামপন্থী প্রার্থী। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং উগান্ডায় জন্ম নেওয়া মামদানি নিউইয়র্কে বড় হয়েছেন এবং বর্তমান প্রজন্মের চাহিদার প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন।

মেয়র নির্বাচনে নিউইয়র্ক সিটি এক গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু আমেরিকারই নয়, বিশ্বের অন্যতম আর্থিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। শহরটির পরবর্তী মেয়রের সিদ্ধান্ত শুধু স্থানীয় নয়, ভ্রমণকারী প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষকেও প্রভাবিত করবে। এ কারণেই এই নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

মামদানি তার প্রচারে ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, গণপরিবহন সহজলভ্য করা ও সাশ্রয়ী মুদিদোকান চালুর মতো পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে, কুমো শহরের কার্যকর ব্যবস্থাপনা, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা এবং ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

জরিপ অনুযায়ী, দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান খুবই কম। ‘ডেটা ফর প্রগ্রেস’-এর এক জরিপে দেখা গেছে, ধাপে ধাপে ভোটগণনায় কুমো ৫১ শতাংশ ও মামদানি ৪৯ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। অন্যদিকে, কুমোর নিজের শিবির পরিচালিত জরিপে তিনি ১২ পয়েন্টে এগিয়ে। তবে জনপ্রিয় কংগ্রেসওমেন আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কোর্তেজ মামদানিকে সমর্থন দেওয়ায় তরুণদের মধ্যে তার অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে।

গাজা-ইসরায়েল সংকট নিয়েও মামদানির অবস্থান স্পষ্ট। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণে তিনি রক্ষণশীল মহলে সমালোচিত, এমনকি বিতাড়নের দাবি পর্যন্ত উঠেছে। তবে, এই সাহসী অবস্থান অনেক ভোটারকে অনুপ্রাণিত করছে।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী নির্ধারণের এই বাছাইপর্ব কেবল নিউইয়র্কের ভবিষ্যৎ নয়, বরং পুরো ডেমোক্রেটিক পার্টির দিকনির্দেশনা নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নতুন মুখের বিপরীতে পুরনো অভিজ্ঞতা—এই দ্বন্দ্বের মীমাংসা হবে ২৪ জুনের ভোটেই।