গাজা শহরের দক্ষিণাঞ্চলে খাদ্য সহায়তার জন্য অপেক্ষমাণ বেসামরিক জনগণের ওপর ফের গুলি চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
নেটজারিম করিডোরের কাছে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে এ হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে, ত্রাণের আশায় জড়ো হওয়া নিরস্ত্র মানুষদের লক্ষ্য করে হঠাৎই গুলি ছোড়ে ইসরায়েলি সেনারা। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের উত্তরে আল-কারারা শহরের পাশে আল-মাওয়াসি এলাকার একটি অস্থায়ী শিবিরে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন আরও চার ফিলিস্তিনি। সেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষরা একটি তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন। নাসের হাসপাতালের এক কর্মকর্তা আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, নিহতরা সবাই আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন এবং রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত অবস্থায় হামলার শিকার হন।
এই বর্বর হামলার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। যুক্তরাজ্য সরকার কড়া পদক্ষেপ নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসরায়েলের দুই কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রী—ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মোত্রিচের বিরুদ্ধে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি জানিয়েছেন, এ দুই নেতা ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দিয়েছেন এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত। এখন থেকে তারা যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং দেশটিতে থাকা তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।
ইসরায়েল এই সিদ্ধান্তকে ‘অত্যন্ত আপত্তিকর’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং দাবি করেছে, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৪ হাজার ৯৮১ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২০ জন। মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা, খাদ্য ও ওষুধের সংকট, এবং আশ্রয়স্থলে হামলা—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ।