দেশে আবারও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জনের শরীরে কোভিড–১৯ শনাক্ত হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে স্বাস্থ্য প্রশাসন। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আবারও সীমিত পরিসরে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১১ জুন (বুধবার) বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক হালিমুর রশীদ। তিনি জানান, যেসব মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে আরটি–পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেসব স্থানে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকছে ঢাকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এসব স্থানে আগে থেকেই আরটি–পিসিআর ল্যাব থাকায় দ্রুতই পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, করোনা পরীক্ষা কেবল উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের জন্য সীমিত আকারে চালু করা হবে। যেমন:
যাদের শরীরে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ কোভিড–১৯–এর উপসর্গ রয়েছে
অথবা যাদেরকে চিকিৎসক পরীক্ষা করাতে পরামর্শ দিয়েছেন
স্থানীয় কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পরীক্ষার কিট সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশ থেকেও কিট আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপো (সিএমএসডি)–কে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অধ্যাপক হালিমুর রশীদের ভাষ্য অনুযায়ী, আগামী ১০ দিনের মধ্যেই পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
১১ জুনের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের মধ্যে করোনা শনাক্তের হার ছিল প্রায় ১২.৮৭%—যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এর আগে ৯ জুন ৪১টি নমুনায় ৫ জন আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের সবাই ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দা। যদিও মৃত্যুর খবর নেই, তবু সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার এই প্রাথমিক ইঙ্গিত প্রশাসনকে সতর্ক করে তুলেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনগণকে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও উপসর্গ দেখা দিলে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরসহ সকল প্রবেশপথে হেলথ স্ক্রিনিং জোরদার করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দেশে আবারও সংক্রমণ দ্রুতগতিতে বাড়তে পারে। এ কারণেই পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।