স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

স্বাস্থ্যখাতে বহুদিনের জটিল সমস্যা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। সোমবার (৫ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের জমা দেওয়া সুপারিশপত্র গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, “দেশের স্বাস্থ্যখাতে যেসব দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা রয়েছে, সেগুলোর সমাধানে কমিশনের সুপারিশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো এখনই কার্যকর করতে হবে।”
স্বাস্থ্যখাতের দুর্বলতা দীর্ঘদিনের— এমন মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এখন যদি আমরা সমস্যাগুলোর বাস্তব সমাধান করতে পারি, তবে তা হবে স্বাস্থ্য খাতের জন্য এক যুগান্তকারী ঘটনা।”
স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিকিৎসকের সংকট ও সঠিক জায়গায় পোস্টিং নিশ্চিত না হওয়াকে চিহ্নিত করেন ড. ইউনূস। “অনেক ক্ষেত্রে ডাক্তার থাকলেও যেখানে দরকার সেখানে নেই। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান জরুরি।”
তিনি চিকিৎসা ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “চিকিৎসকদের নির্ধারিত কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা দিতে হবে, তা না হলে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।”
প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন জাতীয় অধ্যাপক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান ডা. এ কে আজাদ খান। সঙ্গে ছিলেন জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অধ্যাপক লিয়াকত আলী, বিশিষ্ট গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সায়েবা আক্তার, সাবেক সচিব এম এম রেজা, ডা. আজহারুল ইসলাম, ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, ডা. আহমেদ এহসানুর রাহমান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি উমায়ের আফিফ।
কমিশনের অন্য দুই সদস্য হলেন— বিশিষ্ট শিশু নিউরোলজিস্ট ডা. নায়লা জামান খান এবং স্বাস্থ্যনীতি বিশেষজ্ঞ ডা. মোজাহেরুল হক।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যখাতে সেবার মান উন্নয়ন, দুর্নীতি কমানো, জনবল ঘাটতি পূরণ এবং প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনা গড়তে এ কমিশন গঠিত হয়। দীর্ঘ গবেষণা ও পর্যালোচনার পর তারা এই সুপারিশপত্র তৈরি করে।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে স্পষ্ট—এই সংস্কার বাস্তবায়ন স্বাস্থ্যখাতের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথ উন্মুক্ত করতে পারে। এখন দেখার বিষয়, কত দ্রুত এবং কতটা কার্যকরভাবে এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হয়।