দক্ষিণ আফ্রিকার সময়ের অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হেনরিখ ক্লাসেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে হঠাৎই বিদায় জানিয়েছেন। বয়স মাত্র ৩৩, পারফরম্যান্সও ছিল দুর্দান্ত। এমন সময় অবসরের সিদ্ধান্তে বিস্মিত ক্রিকেটবিশ্ব। কিন্তু কেন এমন আকস্মিক সিদ্ধান্ত?
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে ক্লাসেন জানালেন অবসরের পেছনের বাস্তব কারণ।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় এক পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লাসেন বলেন, সাবেক কোচ রব ওয়াল্টারের বিদায় তার মনে গভীর প্রভাব ফেলে। “চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে রব-এর সঙ্গে অনেক কথা হয়েছিল। আমি তখনই বলেছিলাম— ভালো লাগছে না। খেলা আর উপভোগ করছিলাম না। আমরা বিশ্বকাপ ২০২৭ পর্যন্ত একসঙ্গে একটি পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু যখন রব সরে গেল এবং বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা ঠিকভাবে এগোল না, তখন সিদ্ধান্তটা সহজ হয়ে গেল।”
মূলত কোচের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং স্বাধীন খেলার পরিবেশই তাকে ধরে রেখেছিল জাতীয় দলে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ক্লাসেনের উচ্চ চাহিদা থাকা সত্ত্বেও, তিনি নিয়মিত দেশের হয়ে খেলেছেন শুধুমাত্র কোচ ওয়াল্টারের অনুপ্রেরণায়। জানা যায়, ওয়াল্টার তাকে আইপিএল, এসএ২০, সিপিএল, দ্য হান্ড্রেড ও এমএলসির মতো লিগে খেলার স্বাধীনতা দিতেন। কিন্তু তার বিদায়ের পর দৃশ্যপট বদলে যায়।
নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন শুকরাড কনরাড, যিনি এখন তিন ফরম্যাটেই দায়িত্বে রয়েছেন। ক্লাসেন আশঙ্কা করেন, নতুন কোচের অধীনে আগের মতো স্বাধীনতা নাও মিলতে পারে। যদিও কনরাডের সঙ্গে তার কোনো দ্বন্দ্ব নেই, ক্লাসেন বলেন, “শুকরি কনরাড দায়িত্ব নেওয়ার আগেই আমি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমাদের সম্পর্ক দারুণ।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের আগে ক্লাসেন দক্ষিণ আফ্রিকার কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। যদিও সে সময় অবসরের কোনো ইঙ্গিত দেননি। তার ভাষায়, “অনেক দিন ধরে আমি আমার পারফরম্যান্স বা দলের জয়-পরাজয় কোনো কিছুতেই গুরুত্ব দিচ্ছিলাম না। বুঝে গিয়েছিলাম, এটা আর আমার জায়গা নয়।”
ক্লাসেনের এই বিদায় দক্ষিণ আফ্রিকা দলের জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় ক্ষতি। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে হয়তো তাকে নিয়মিত দেখা যাবে, যেখানে তিনি বরাবরই ছিলেন জনপ্রিয় এবং কার্যকর।