আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে এবং পশু পরিবহন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেখছি, কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য থেকে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। এটা খুবই দুঃখজনক ও অমানবিক। এর অবসান হওয়া জরুরি।”
তিনি অভিযোগ করেন, চামড়ার বাজারে একটি অসাধু সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে, যারা কৃত্রিমভাবে দাম কমিয়ে জনগণকে ঠকাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা নিশ্চিত করতে চাই, কেউ যেন সিন্ডিকেট গঠন করে বা অব্যবস্থাপনার সুযোগ নিয়ে জনগণের প্রাপ্য থেকে তাদের বঞ্চিত না করতে পারে।”
এই সমস্যা সমাধানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে আরো থাকছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
প্রধান নির্দেশনাসমূহের মধ্যে রয়েছে:
পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা
সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রণ
কোরবানির পশু পরিবহনে মানবিক আচরণ নিশ্চিত করা
হাটে পশুর সুরক্ষা ও পরিবেশ রক্ষা
চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে ইটিপি ব্যবস্থার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা
স্থানীয় প্রশাসন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকর সমন্বয়
উল্লেখ্য, প্রতি বছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশে কোটি কোটি টাকার চামড়া বাণিজ্য হয়ে থাকে। কিন্তু অব্যবস্থা ও সিন্ডিকেটের কারণে দরিদ্র মানুষের প্রাপ্তির জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়ে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুরো অর্থনীতিও।
আজকের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা নিজে এবং উপস্থিত ছিলেন সরকারের বিভিন্ন স্তরের উপদেষ্টা ও শীর্ষ কর্মকর্তা। এই কমিটির কার্যক্রমের মাধ্যমে একটি সুশৃঙ্খল, স্বচ্ছ ও মানবিক কোরবানির মৌসুম নিশ্চিত করার প্রত্যাশা করছে সরকার।