টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যালিফোর্নিয়ার অন্যতম শহর লস অ্যাঞ্জেলেস। অভিবাসনবিরোধী অভিযানের জেরে ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভ দমাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে শহরে মোতায়েন করা হয়েছে ন্যাশনাল গার্ডের দুই হাজার সেনা।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে দেশটির অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থা (ICE) নথিহীন অভিবাসীদের ধরতে অভিযান শুরু করে। এ নিয়ে শহরজুড়ে শুরু হয় জনরোষ, যা দ্রুত সহিংসতায় রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই হোয়াইট হাউজ থেকে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত আসে।

বিবিসি বলছে, শুক্রবার রাতেই লস অ্যাঞ্জেলেসের বিভিন্ন এলাকায় আইসিই এজেন্টদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা। শনিবারও দক্ষিণ লস অ্যাঞ্জেলেসে ফেডারেল এজেন্টদের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ছোড়া হয় টিয়ার গ্যাস।

ICE'র পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুধু শুক্রবার রাতেই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ৪৪ জন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোটা সপ্তাহজুড়ে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৮ জনে। গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবিতে শত শত মানুষ ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দেন: “মুক্তি দাও, মুক্তি দাও!”

হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অভিবাসীদের মাধ্যমে দেশে “অবৈধ অপরাধীদের অনুপ্রবেশ” রোধে অভিযানগুলো জরুরি। বিবৃতিতে দাবি করা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সহিংস জনতা আইসিই কর্মকর্তাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে, যা “জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”

তবে এই সেনা মোতায়েন নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উস্কানিমূলক। এতে কেবল পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে।”

আল জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক বিভাজন ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটরা দীর্ঘদিন ধরেই সোচ্চার। ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনকে তাঁরা দেখছেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত শক্তি প্রয়োগ হিসেবে।