মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মিসাইলটি বিমানবন্দরের একটি খালি জায়গায় আঘাত হানে, যেখানে সৌভাগ্যক্রমে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে এ হামলার পরপরই কিছু সময়ের জন্য বিমানবন্দরে সব ধরনের বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়।
দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) দাবি করেছে, তারা প্রতিরক্ষামূলক মিসাইল ব্যবহার করে হুথিদের মিসাইল থামাতে চেয়েছিল, কিন্তু সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। বিষয়টি নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে উদ্বেগ বাড়ছে। এই ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
হুথি আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ আল-বুখাইতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিকে জানান, এ হামলার মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছেন যে ইসরায়েলের সবচেয়ে স্পর্শকাতর স্থাপনাতেও তারা আঘাত হানতে সক্ষম। হুথিদের মিডিয়া প্রধান নাসের আল-দ্বিন ওমর আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থাগুলোকে হুঁশিয়ার করে বলেন, “ইসরায়েলে ফ্লাইট পরিচালনা মানে নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলা।”
এই হুমকির জেরে জার্মান এয়ারলাইন লুফথানসা এবং স্প্যানিশ ক্যারিয়ার এয়ার ইউরোপ আজ রোববার (৪ মে) ইসরায়েলে তাদের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে। এটি ইসরায়েলের বৈদেশিক যোগাযোগ ও পর্যটন খাতে বড় ধরনের আর্থিক ধাক্কা।
এদিকে, টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আজ দুপুরে দেশের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছেন। সেখানে হুথিদের অবকাঠামো লক্ষ্য করে সরাসরি পাল্টা হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার সঙ্গে আরেকটি বৈঠকেও তিনি অংশ নেবেন, যেখানে গাজায় হামলার বিস্তার এবং সিরিয়াতেও আঘাত হানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত মার্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের অবস্থান লক্ষ্য করে একাধিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের দিক লক্ষ্য করে একাধিক ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়েছে। তাদের দাবি, গাজায় নির্বিচার হামলার প্রতিশোধ হিসেবেই তারা এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, লোহিত সাগরে ইসরায়েলি, মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজ চলাচলেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে হুথি কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা চিত্র আরো অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা ইসরায়েলের কৌশলগত ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি, যা হুথিদের সামরিক সক্ষমতার একটি স্পষ্ট বার্তা বহন করে।