রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক জায়গাগুলোতে আমাদের একমত হতে হবে : অধ্যাপক আলী রীয়াজ

স্বৈরশাসনের পুনরাবৃত্তি যেন আর কখনও না ঘটে— এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ রাষ্ট্র বিনির্মাণের মৌলিক প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোকে দ্রুত অভিন্ন অবস্থানে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
আজ রোববার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে সংলাপের সূচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “বাংলাদেশ অতীতে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের কারণে ভয়াবহ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসনের শিকার হয়ে মানুষ আশাহত হয়েছিল। সেই অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফেরার সুযোগ তৈরি হয়েছে তরুণদের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মূল লক্ষ্য একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের পথনির্দেশনা দেবে। তবে সেটি কেবল ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সম্ভব। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মতপার্থক্য সংকুচিত করে অভিন্ন অবস্থানে আসতে হবে।”
কমিশনের সহ-সভাপতি স্পষ্ট করেন, “এই দায়িত্ব শুধু কমিশনের নয়। কমিশন কেবল অনুঘটক। মূল আলোচনা এবং সমঝোতার কাজটি রাজনৈতিক দলগুলোকেই করতে হবে।”
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।
১২ দলীয় জোটের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এলডিপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারার অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জাগপার রাশেদ প্রধানসহ আরও অনেকে।
জোটের সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, “গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকবেই, তবে আমাদের লক্ষ্য একটি স্থায়ী সমাধান। ভবিষ্যতে যেন কোনো স্বৈরশাসক ইচ্ছেমতো সংবিধান পরিবর্তন করতে না পারে— সেটিই নিশ্চিত করতে চাই।”
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের দেয়া ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে ১১১টিতে একমত পোষণ করেছে জোট, ৪৮টিতে দ্বিমত এবং ৭টিতে নিরপেক্ষ থেকেছে।
আজ বিকেলে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির সঙ্গেও বৈঠকে বসবে কমিশন। রাজনৈতিক ঐক্য ও সুসংহত ভবিষ্যতের পথে এটি আরেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।