গোপালগঞ্জে কোরবানি ঘিরে তেঁতুল গাছের খাটিয়ার বিক্রি বেড়েছে।

ঈদুল আজহা সামনে রেখে গোপালগঞ্জে ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে খাটিয়া, হোগলা ও খড়ের চাহিদা। তবে এ বছর বিক্রেতা ও ক্রেতাদের নজর কেড়েছে তেঁতুল গাছের তৈরি খাটিয়া, যার চাহিদা অন্যান্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিক্রেতারা।
গোপালগঞ্জ পৌরসভা ছাড়াও সদর উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও অলিগলিতে এখন বসেছে খাটিয়া ও পশু জবাই-পরবর্তী উপকরণের অস্থায়ী পসরা। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে জমজমাট বেচাকেনা। স্থানীয় বিক্রেতারা জানান, ঈদের আগে এমন চিত্র প্রতিবছর দেখা গেলেও, এবার তেঁতুল কাঠের খাটিয়ার প্রতি আলাদা আগ্রহ দেখা গেছে।
বিক্রেতা তুহিন সরদার বলেন, “গত বছর যেখানে ১২০-১৩০টি খাটিয়া বিক্রি হয়েছিল, এ বছর এনেছিলাম ২৫০টি। সকাল পর্যন্ত মাত্র ২০-২৫টি খাটিয়া অবশিষ্ট আছে।” তিনি আরও জানান, ক্রেতারা এবার দামে খুব একটা দরকষাকষি করছেন না, কারণ প্রয়োজনীয়তা বেশি।
খাতিয়ার চাহিদা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে কোরবানির কাজের জন্য উপযুক্ত শক্ত কাঠ ও আরামদায়ক কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা। তেঁতুল কাঠের খাটিয়া দীর্ঘস্থায়ী এবং ভারবহনক্ষম বলে এগুলো বেশি পছন্দ করছেন কোরবানির পশুর মালিকেরা।
ক্রেতা মো. শাহাবুদ্দিন সুজা বলেন, “কোরবানির মাংস ও হাড় কাটাকাটির জন্য খাটিয়া একদম অপরিহার্য। ঘরের মেঝেতে কাজ করাটা কষ্টসাধ্য এবং অস্বাস্থ্যকর। তাই খাটিয়া ছাড়া কোরবানির কাজ কল্পনাই করা যায় না।”
স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একটি খাটিয়ার দাম নির্ভর করছে সাইজ ও কাঠের মান অনুযায়ী। দাম রাখা হচ্ছে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও বিক্রি হচ্ছে হোগলার চট, প্লাস্টিকের পাটি ও খড়কুটো, যা পশু জবাই ও মাংস কাটাকাটির পরিস্কার কাজে ব্যবহৃত হয়।
বিক্রেতাদের ভাষায়, “ঈদের আগের শেষ সপ্তাহেই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। অনেকে আগে থেকে অর্ডার দিয়ে রাখেন, আবার অনেকেই শেষ মুহূর্তে এসে বেশি দামে কিনতে বাধ্য হন।”
এই চাহিদা প্রতিফলিত করছে কোরবানির ঈদে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গ্রামীণ সরঞ্জামের প্রতি মানুষের নির্ভরশীলতা এবং স্থানীয় কুটির শিল্পের উজ্জ্বল সম্ভাবনা।