মশি উদ দৌলা রুবেল, ফেনী।। ফেনীর সোনাগাজীতে সংঘবদ্ধ ছিনতাই ও চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযানে দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন সোনাপুর এলাকার মো. হামিদের পুত্র সিফাত (২৫) এবং বেলায়েত হোসেনের পুত্র ওমর ফারুক ওরফে মিস্টার। তারা দীর্ঘদিন ধরে সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার (২ মে) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আমিরাবাদ থেকে তাদের আটক করা হয়। এদের বিরুদ্ধে একাধিক চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে। তবে এবার তাদের গ্রেফতারের সূত্রপাত ঘটে ৮ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে কেন্দ্র করে সংঘটিত এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার জেরে।

গত ২৯ এপ্রিল, মতিগঞ্জ এলাকার ওই স্কুলছাত্রী তার তিন বান্ধবীসহ ঘুরতে গিয়েছিল মুহুরি প্রজেক্টে। দুপুর আনুমানিক দুইটায় দাস গ্রাম এলাকায় পৌঁছালে অভিযুক্তরা পথরোধ করে তাদের রিকশা থামায়। ছাত্রীর বান্ধবীদের তাড়িয়ে দিয়ে একজন অজ্ঞাত ছেলেকে ডেকে এনে মেয়েটিকে হেনস্তা করা হয়। এরপর চক্রের সদস্যরা মেয়েটির পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে দাবি করে, সে নাকি ছেলেটির সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছে। এই অভিযোগের জেরে তারা পরিবারের কাছে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।

চাপে পড়ে ছাত্রীর পরিবার প্রথমে ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হলেও, তা থেকে মাত্র ১৩ হাজার টাকা দিতে সক্ষম হয়। বাকি অর্থ না পেয়ে ৩০ এপ্রিল ও ১ মে দু’দফা হামলা চালানো হয় মেয়েটির নানাবাড়িতে। চক্রের ভয়ংকর এই তৎপরতায় পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

অবশেষে ভুক্তভোগীর পিতা আব্দুল্লাহ (প্রবীণ বাবুল) বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সিফাত ও ওমর ফারুকসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলার ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত অভিযানে নামে এবং দুই মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান এখনো চলছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সোনাগাজীসহ ফেনী জেলার বেশ কিছু এলাকায় ইদানীং চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও কিশোর অপরাধের হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এমন অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই ধরনের তৎপরতা সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা তৈরি করেছে।

এদিকে স্থানীয়রা এই চক্রের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, এ ধরনের অপরাধীরা যদি শাস্তি না পায়, তবে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।