মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ইবাদত পবিত্র হজ। ২০২৫ সালের হজ পালিত হবে আগামী ৫ জুন (৯ জিলহজ) বৃহস্পতিবার। এদিন আরাফার ময়দানে সমবেত হবেন লাখো হাজি—আল্লাহর মেহমান হয়ে।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা ৮ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী। এই পাঁচ দিন হাজিদের ধাপে ধাপে কিছু নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে হয়, যেগুলো হজের ফরজ, ওয়াজিব এবং সুন্নাহ হিসেবে বিবেচিত। নিচে হজের প্রতিদিনের কাজগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:
প্রথম দিন (৮ জিলহজ): মিনায় যাত্রা ও রাতযাপন
এই দিন হজের শুরু। যারা তামাত্তু হজ পালন করছেন, তারা পুনরায় ইহরাম বাঁধবেন। এরপর তালবিয়া পড়ে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন। হাজিগণ এদিন জোহর, আসর, মাগরিব, এশা এবং পরদিন ফজরের নামাজ মিনায় আদায় করে রাতে সেখানেই অবস্থান করবেন। এটি সুন্নাত মুয়াক্কাদা।
দ্বিতীয় দিন (৯ জিলহজ): আরাফায় অবস্থান ও মুজদালিফায় রাতযাপন
এ দিনটি হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন, যাকে বলা হয় “ইয়াওমে আরাফা”।
ফজরের নামাজের পর হাজিরা আরাফার ময়দানে যাবেন।
জোহর ও আসরের নামাজ এক আজানে দুই ইকামতে জামাতে আদায় করবেন মসজিদে নামিরায় (যদি সম্ভব হয়)।
আরাফায় সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করা ফরজ। এ সময় বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার করবেন।
এরপর মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দিয়ে সেখানে রাত যাপন করবেন। এশার ওয়াক্ত হলে এক আজানে মাগরিব ও এশা একত্রে আদায় করবেন।
তৃতীয় দিন (১০ জিলহজ): পাথর নিক্ষেপ, কুরবানি, চুল মুণ্ডন ও তাওয়াফে জিয়ারত
পঞ্চম দিন (১২ জিলহজ): পুনরায় পাথর নিক্ষেপ ও বিদায় প্রস্তুতি
এদিনও মিনায় রাত যাপন সুন্নাত।
আগের দিনের মতো আবার তিন জামারায় ৭টি করে মোট ২১টি কংকর নিক্ষেপ করতে হবে।
সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করলে ১৩ জিলহজের রমি (পাথর নিক্ষেপ) করতে হয় না। তবে নবীজি (সা.) ১৩ জিলহজও মিনায় অবস্থান করেছিলেন—এ জন্য অনেকেই সেই দিন পর্যন্ত থাকেন।
বিদায়ী তাওয়াফ (তাওয়াফে বিদা): শেষ আনুষ্ঠানিকতা
হজের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে মক্কা থেকে বিদায়ের আগে হাজিদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব) আদায় করা অপরিহার্য।
মাকামে ইবরাহিমে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে কাবা শরিফকে বিদায় জানাতে হয়।
যমযমের পানি পান করে দোয়া করবেন।
কেউ যদি বিদায়ী তাওয়াফ না করেন, তবে একটি দম (কুরবানি) ওয়াজিব হবে।
– লেখক: মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী, নিউজ ডেস্ক রিপোর্ট