গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায় সাধক বুদ্ধিমন্ত সরকার (৭০) হত্যাকাণ্ডের জট খুলেছে অবশেষে। জমি ও পাওনা টাকা নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. মো. রুহুল আমিন সরকার। ২ জুন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বুদ্ধিমন্ত সরকারের পৈত্রিক সম্পত্তির মধ্যে ২০ শতাংশ জমি তার নামে বেশি রেকর্ড হওয়ায় ভাইদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। অন্যদিকে, বুদ্ধিমন্ত সরকার লিংকন সরকারের পিতা বিনয় সরকারের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন, যা তিনি ফেরত দেননি। জমি ও টাকা সংক্রান্ত এই দ্বন্দ্বই শেষ পর্যন্ত হত্যার রূপ নেয়।
পুলিশ জানায়, ২৯ মে রাত ৮টার দিকে সাধক বুদ্ধিমন্ত সরকার ধানের গোলাঘরে পাহারা দেওয়ার সময় ঘুমিয়ে পড়েন। তখন আসামি লিংকন সরকার বাঁশ দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে এবং গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর মৃতদেহ পাটক্ষেতে টেনে নিয়ে গিয়ে দুই পা কেটে ফেলে। পরে তার দেহাংশ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেয়।
১ জুন সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লিংকন সরকারকে গ্রেফতার করে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ। পরদিন সকালে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মৃতের জুতা, দা, গামছা ও পাঞ্জাবি উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, সাধক বুদ্ধিমন্ত সরকার সনাতন ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতেন। তাই এই হত্যাকাণ্ডকে সাম্প্রদায়িক রূপ দিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল একটি কুচক্রী মহল। তবে পুলিশ তদন্তে প্রমাণ করেছে এটি ব্যক্তিগত ও আর্থিক বিরোধের জেরে সংঘটিত অপরাধ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ পরিদর্শক বিধান কুমার চন্দ্র এবং বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।