দক্ষিণ এশিয়ায় আবারও যুদ্ধের শঙ্কা। ভারত যদি সিন্ধু নদের পানিপ্রবাহ রুদ্ধ করতে কোনো ধরনের বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, তাহলে পাকিস্তান সামরিক হামলার পথ বেছে নেবে— এমনই সরাসরি হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ।

শুক্রবার (২ মে) জিও নিউজের জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘নয়া পাকিস্তান’-এ এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, “শুধু বন্দুক বা কামান দিয়ে আগ্রাসন হয় না। পানি বন্ধ করে দেওয়া মানে লক্ষ মানুষের জীবন বিপন্ন করা। এটিও যুদ্ধেরই একটি রূপ। যদি ভারত সিন্ধুর পানি বন্ধের চেষ্টা করে, আমরা নিশ্চয়ই সেই অবকাঠামো ধ্বংস করব।”

খাজা আসিফ জানান, পাকিস্তান বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিষয়টি তুলে ধরছে এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

এ হুঁশিয়ারি এমন এক সময়ে এলো, যখন গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি উপশাখা ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’। পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে চালানো এই হামলায় ২৬ জন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হন।

ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে এ হামলার জন্য দায়ী করে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস, ভিসা বাতিল ও সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতসহ একাধিক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়। ইসলামাবাদ অবশ্য হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে এবং পাল্টা জবাবে ভারতের জন্য আকাশ ও স্থলসীমা বন্ধ, বাণিজ্য স্থগিতসহ কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে আবারও যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘনীভূত হচ্ছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেন বলে দেশটির গণমাধ্যম জানায়।

তবে এখনও পর্যন্ত সরাসরি সামরিক সংঘাত শুরু না হলেও, খাজা আসিফের মতে— “এটি ভাবার সময় আসেনি যে যুদ্ধের হুমকি কেটে গেছে। পরিস্থিতি যে কোনো মুহূর্তে বিস্ফোরক হয়ে উঠতে পারে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, সিন্ধু নদ নিয়ে এমন উত্তেজনা ‘সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি ১৯৬০’-এর ভবিষ্যৎকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যদি সত্যি সংঘর্ষ শুরু হয়, তাহলে তার প্রভাব হবে বৈশ্বিক।