মশি উদ দৌলা রুবেল, ফেনী।। ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার এক চাঞ্চল্যকর প্রতারণার অভিযোগ ঘিরে স্থানীয় মহলে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বিমল দত্ত নামের এক ব্যক্তি, যিনি লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারে কর্মরত ছিলেন এবং বর্তমানে সাসপেন্ড অবস্থায় রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ফেনীর এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় সাত লাখ টাকার পণ্য নিয়ে টাকা না দেওয়ার পাশাপাশি উল্টো ভয়ভীতি ও মামলা করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম জানান, ফুলগাজীর দাউদপুর কাঁচাবাজার সংলগ্ন “এমিটি এগ্রো” নামের একটি খামার ব্যবসার জন্য তিনি বিমল দত্তকে বিশ্বাস করে গরুর খাদ্য সরবরাহ করেন। বিমল নিজেকে একজন সৎ কারারক্ষী এবং তার পিতা বিপ্লব কান্তি দত্তকে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সমাজসেবী হিসেবে পরিচয় দিয়ে মাল নেন। তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক পরিচয়ে বিশ্বাস করে মালামাল সরবরাহ করেন তিনি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে টাকা ফেরত না দিয়ে বরং হুমকি-ধমকি দেওয়া শুরু করেন বিমল।
অভিযোগে বলা হয়, বিমল দাবি করেন তার পিতা ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন এবং চাইলে প্রশাসনকে ব্যবহার করে পাওনাদারদের ‘জেলের ভাত খাওয়ানো’ হবে। এমনকি বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্টদের ব্যবহার করে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীর।
সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হলো, পাওনাদার তাজুল ইসলাম যখন টাকা ফেরত চেয়ে চাপ দেন, তখন বিমল দত্ত তার বিরুদ্ধে উল্টো পাওনা টাকার মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় ফুলগাজী ও ফেনী জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
৩১ মে (শনিবার) সন্ধ্যায় এই ঘটনার প্রতিবাদে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন ভুক্তভোগী তাজুল ইসলাম। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার বন্ধু মোহাম্মদ তারেক, তানভিরুল ইসলাম এবং আবদুল্লাহ আল বায়েজিদ। সাংবাদিক সম্মেলনে তারা বিমল দত্ত ও তার পিতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উল্লেখ্য, স্থানীয় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও জেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দও জানিয়েছেন, বিপ্লব কান্তি দত্ত ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে অতীতে একাধিক অভিযোগে সালিশ বৈঠক হয়েছে। ধর্মীয় পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার জনমনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।