একাই একশো নয়, দরকার জনতার ঐক্য : ভিপি নুর

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে কড়া বার্তা দিয়ে বলেছেন, “আমরা একাই একশো, আমরাই সব নিয়ন্ত্রণ করবো”—এমন আত্মবিশ্বাসে যারা ভুগছেন, তারা যেন আওয়ামী লীগের পরিণতি থেকে শিক্ষা নেন। এদেশের মানুষ আর কাউকে পরোয়া করে না, কেউ ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে এলে তা রুখে দাঁড়াবে জনগণ।
শুক্রবার (২ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটী এলাকায় জেলা ও মহানগর যুব অধিকার পরিষদের যুব সমাবেশে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
নুর বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ অতীতে অনেক কিছু সহ্য করলেও এখন অনেক বেশি সচেতন। ভোটকেন্দ্র দখল করে আর কেউ জনপ্রতিনিধি হতে পারবে না। বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি—জুলাইয়ের ঐক্য ধরে রাখুন। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো আন্দোলন বা নির্বাচনে সাফল্য আসবে না।”
তিনি আরও বলেন, “গণ অধিকার পরিষদ দেশের ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। নেতাকর্মীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হয়, তাহলে চেয়ারম্যান ও মেয়র পদেও আমরা অংশগ্রহণ করব।”
নারায়ণগঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই শহর একসময় শামীম ওসমানের দখলে ত্রাসের রাজত্বে ছিল। ক্ষমতার পালাবদলের পর তিনি পালিয়ে যান, আবার নতুন ‘শামীম ওসমান’ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। নারায়ণগঞ্জবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি—এবার যেন আর কেউ সেই অতীত ফিরিয়ে আনতে না পারে।”
রাজনীতির বর্তমান বাস্তবতা নিয়ে স্পষ্ট ভাষায় নুর বলেন, “যে অভ্যুত্থানে দুই হাজার মানুষ প্রাণ দিয়েছে, ত্রিশ হাজার পঙ্গু হয়েছে—তার মূল্য কোথায়? আওয়ামী লীগ সে সময় নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে। অথচ আজ পর্যন্ত তাদের নিষিদ্ধ করার কোনো লক্ষণ দেখছি না। শহীদদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি।”
তিনি বলেন, “গত ১৬ বছর রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করলেও জনগণের সম্পৃক্ততা ছিল না। কারণ, নেতাদের ওপর মানুষের আস্থা ছিল না। এখন সেই আস্থা ফিরে আসছে। জনগণ বুঝতে পেরেছে, পরিবর্তনের সময় এসেছে। তবে যারা গণ-আন্দোলনের অংশ ছিল, তাদের মধ্যেই এখন আবার পুরনো অভ্যাস ফিরে আসছে। চাঁদাবাজি, প্রভাব বিস্তার এখনও বন্ধ হয়নি। তাহলে এত মানুষ প্রাণ দিল কেন?”
নুরুল হক নুরের বক্তব্যে স্পষ্ট—দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক শুদ্ধাচার এবং জনতার অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে আগামী দিনে কোনো ফ্যাসিবাদ টিকতে পারবে না।