বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশ ১৬ ধাপ এগিয়েছে—এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে সরকারের অঙ্গীকারের বাস্তব প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। শুক্রবার (২ মে) 'বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস' উপলক্ষে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্যারিসভিত্তিক সংগঠন ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস্’ (RSF) প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স ২০২৫ অনুযায়ী, ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ১৪৯তম। গত বছর (২০২৪) এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশ ১৬ ধাপ উন্নতি করেছে। সূচকে বাংলাদেশ এ বছর ১০০ এর মধ্যে পেয়েছে ৩৩.৭১ স্কোর, যা আগের বছরের ২৭.৬৪ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, "গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোনো প্রভাব নেই। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব গণমাধ্যম এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। এমনকি কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে সরকার পক্ষ থেকে ফোন দিয়ে হস্তক্ষেপ করার সংস্কৃতি এখন নেই।"

তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের গণমাধ্যমকে শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ করতে একাধিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। অচিরেই গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নতুন কার্যক্রম শুরু হবে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখযোগ্য যে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবস্থান এবার সূচকে বাংলাদেশের দুই ধাপ নিচে, অর্থাৎ ১৫১তম। তবে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের চিত্র ততটা আশাব্যঞ্জক নয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সময় বাংলাদেশ ছিল ১২১তম অবস্থানে। গত ১৫ বছরে সূচকে বাংলাদেশ ৪৪ ধাপ পিছিয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক এই উন্নতি নিয়ে উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “যদি স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহকে অব্যাহত রাখা যায়, তবে আগামী বছর বাংলাদেশ আরও উন্নত অবস্থানে পৌঁছাবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের হস্তক্ষেপমুক্ত গণমাধ্যম পরিচালনা এবং স্বচ্ছ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার ফলেই এই সূচক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। তবে একে স্থায়ী সফলতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রয়োজন টেকসই সংস্কার, সাংবাদিক নিরাপত্তা ও সুশাসন নিশ্চিত করা।