নারীদের কর্মক্ষেত্রে বাঁধা নয়, সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করব : জামায়াত আমির

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে এক বিশাল শ্রমিক সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান দাবি করেন, তাদের বিরুদ্ধে যারা নারীদের ঘরবন্দী করার অপবাদ ছড়ায়, তারা সত্য আড়াল করছে। তিনি বলেন, “আমরা বোনদের নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে চাই—নারীরা তাদের যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে কাজ করবে, সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে।”
আজ পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আয়োজিত সমাবেশে তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে নারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা ক্ষমতায় এলে নারীদের নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষা করব ইনশাল্লাহ।”
ডা. শফিকুর রহমান দেশের শ্রমজীবী মানুষের অবহেলিত অবস্থার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “৭০ শতাংশ মানুষ শ্রমজীবী, অথচ তাদের অধিকার আজও উপেক্ষিত। শ্রমিকদের মর্যাদা ও সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিত না হলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।”
তিনি বলেন, মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা না থাকে, তাহলে শিল্প-উৎপাদন কখনোই টেকসই হবে না। “যেদিন মালিকরা শ্রমিককে মানুষ হিসেবে সম্মান দেবে, সেদিন শ্রমিকরা প্রাণভরে কাজ করবে।”
সমাবেশে তিনি অভিযোগ করেন, “ফ্যাক্টরিতে পুরুষের নামাজের জন্য ব্যবস্থা থাকলেও মা-বোনদের জন্য নেই। যারা ইবাদত করতে চান, মালিকরা তাদের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন।” তিনি মালিকদের আহ্বান জানান, ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সম্মান জানান এবং শ্রমিকদের দিক থেকে আত্মিক শক্তি অর্জনে সহায়তা করুন।
জামায়াত আমির বলেন, “আজকের এই দিবসেও চাঁদাবাজরা সক্রিয়। তারা মালিকদের যেমন শোষণ করে, তেমনি শ্রমিকদেরও করে। এই দ্বন্দ্ব বন্ধ হওয়া উচিত। মালিক-শ্রমিক দুই পক্ষেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, শ্রমিকদের প্রকৃত মর্যাদা দিতে হবে। “যে শ্রমিক আট ঘণ্টা কাজ করার পরেও আরও কাজ করতে বাধ্য হয়, তার জীবন অমানবিক। তারও পরিবার আছে, বিশ্রাম দরকার। কিন্তু আমাদের সমাজে শ্রমিকদের ঘামকে আতরের মতো মূল্যায়ন করা হয় না।”
ডা. শফিকুর রহমান জানান, “আমরা একটি বৈষম্যমুক্ত সমাজ চাই। রাসূল (সা.)-এর নীতিতে পরিচালিত রাষ্ট্র চাই, যেখানে মানুষ মানুষ হিসেবে মর্যাদা পাবে, পেশাগত পরিচয়ে নয়।”
তিনি আরও বলেন, “মানুষ মাত্রই আশরাফুল মাখলুকাত। আমরা চাই—দল-মত-ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে, সব মানুষ সম্মান পাক।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ও সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা, যাদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মিয়া গোলাম পরওয়ার, রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ ও নূরুল ইসলাম বুলবুল।