মাহাবুব সুলতান, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া ও পিরোজপুরের নাজিরপুর — এই তিন থানার জনগণের বহুদিনের যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান ভরসা ঘাঘর-বাশবাড়ীয়া সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটির নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অবশেষে কোটালীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজমের সক্রিয় প্রচেষ্টায় এই সড়কের কাজ এখন প্রায় শেষের পথে।

জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে এলজিইডির টেন্ডারে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কটির কাজ পায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি কাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারাও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি আনতে পারেনি। এরই মধ্যে সরকার পরিবর্তনের কারণে কোটালীপাড়ার অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের মতো এই সড়কের কাজও থমকে যায়।

পরিস্থিতির উন্নয়নে কোটালীপাড়া এলজিইডির উদ্যোগে নতুন করে কাজ শুরু হয়, যার তদারকি করছেন উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজম। তার দেখভালে বর্তমানে সড়কটির কাজ প্রায় সম্পন্ন। এলাকাবাসীর আশা, খুব শিগগিরই তারা ভোগান্তিমুক্ত চলাচলের সুবিধা পাবেন।

ঘাঘর-বাশবাড়ীয়া সড়কের গুরুত্ব অনুধাবন করে স্থানীয় বাসিন্দা ও গাড়ি চালক ইউনুস বলেন, “এই রাস্তাটির মাধ্যমে কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া ও নাজিরপুর থানার মানুষের আত্মীয়তা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও চলাচল সবকিছুর সঙ্গে সম্পর্ক। এতদিন রাস্তাটি খারাপ থাকায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।”

টুংগীপাড়া থানার তারাইল বাজারের ব্যবসায়ী কফিল জানান, “এই রাস্তাটি আমাদের ব্যবসার লাইফলাইন। এর বেহাল দশায় দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

শুধু ব্যবসায়ী বা গাড়ি চালক নয়, ভোগান্তির শিকার ছিলেন শিক্ষার্থীরাও। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওলিউল্লাহ বলেন, “রাস্তাটি খারাপ থাকায় অনেক সময় শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারেনি। এখন কাজ শেষের পথে দেখে আমরা আশাবাদী।”

এ বিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজম বলেন, “সরকার পতনের পর আমরা নানা সমস্যায় পড়েছিলাম। পরিত্যক্ত প্রকল্পগুলো নতুন করে সচল করা ছিল অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবে আমরা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছি। আশা করি জনগণ খুব দ্রুত সুফল পাবে।”

এলাকাবাসী এলজিইডি কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলছেন, দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সড়কটি পূর্ণতা পেলে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।