প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ১৮, ২০২৫, ২:৫৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ৩১, ২০২৫, ৭:৩৪ এ.এম
আগামী বাজেটে খাদ্যে বরাদ্দ বাড়ছে ৯ গুণ
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং সার্বিক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে খাদ্য খাতে বিশাল বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার।
চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে যেখানে খাদ্য খাতে মাত্র ১১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, সেখানে আগামী অর্থবছরে এই খাতের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ বাড়িয়ে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে—যা প্রায় ৯ দশমিক ২৪ গুণ বেশি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে স্বস্তি দিতে খাদ্য খাতে এই ব্যতিক্রমী বরাদ্দ প্রস্তাব করা হচ্ছে। একই সঙ্গে খাদ্য সহায়তা এবং ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সরবরাহ কার্যক্রমও সম্প্রসারিত হবে। এজন্য খাদ্য সহায়তা খাতে ১০ হাজার কোটি টাকা এবং টিসিবির জন্য ১৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশের সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে এই বরাদ্দ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল শেষে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। যদিও মার্চে তা ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং জানুয়ারিতে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, খাদ্য নিরাপত্তা শুধু পুষ্টির প্রশ্ন নয়, এটি একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের মৌলিক শর্ত। এ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলে খাদ্য মজুত ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন যেমন ঘটবে, তেমনি নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এটি হবে জীবনের সহায়ক। তাই সরকার টার্গেট করছে খাদ্য ঘাটতি ও মূল্যস্ফীতি একযোগে মোকাবিলার।
প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়িয়ে এ খাতে বরাদ্দ ধরা হতে পারে ১ লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সেইসঙ্গে খাদ্য সহায়তা, টিসিবি কার্যক্রম এবং ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার পরিসর বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
অন্যদিকে বাজেটে এইচএস কোড সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান, শিল্প খাতে কর অবকাশ সুবিধা পুনর্মূল্যায়ন এবং মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির ওপর কর কাঠামোর সামঞ্জস্য আনা হচ্ছে। একইসঙ্গে সাধারণ করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর চিন্তাও রয়েছে।
সরকার আশা করছে, খাদ্য খাতে এ ধরনের বরাদ্দ ও নীতিগত সহায়তার মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরবে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।